Saturday, December 12, 2020

উচ্চশিক্ষা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার সময়সূচীর ব্যাপারে সুর নরম করলো


 বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নানা সময়ে পরীক্ষা নেয়ার আবেদন তাদের কাছে আসছে।


ছাব্বিশে ডিসেম্বর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নেয়া হবে, কিন্তু হল খোলা হবে না - একাডেমিক কাউন্সিলের এমন সিদ্ধান্তের দুদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য বিবিসিকে বললেন, শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে, পরিস্থিতি বুঝে দেয়া হবে পরীক্ষার তারিখ। তবে পরীক্ষা হলেও আবাসিক হল না খোলার ব্যাপারেই অনঢ় তিনি।


এই পরীক্ষা যদি অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে এটা হবে করোনাভাইরাস মহামারির পর মূলধারার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রথম সশরিরে পরীক্ষা গ্রহণ।


মহামারির কারণে গত মার্চ থেকে বন্ধ আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷ গত জুন থেকে অনলাইনে ক্লাস চললেও এখন পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হয়নি।


বৃহস্পতিবার একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ২৬ ডিসেম্বর থেকে স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষাগুলো নেওয়া হবে। এই খবর স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।


বিশেষ করে ঢাকার বাইরে থেকে আসা যেসব শিক্ষার্থী আবাসিক হলে থেকে বিশ্বাবিদ্যালয় পড়েন, তাদের বক্তব্য, পরীক্ষা দেয়ার জন্য জন্য ঢাকায় এসে কোথায় থাকবেন তারা? কীভাবে অংশ নেবেন পরীক্ষা?


  • সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটাই ভর্তি পরীক্ষা
  • মুক্ত চিন্তার জায়গা কমে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে?
  • ক্লাসে ফিরতে চান ঢাবি শিক্ষক রুশাদ ফরিদী
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণে অভিযুক্তকে সর্বোচ্চ শাস্তি

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান

যে কারণে পরীক্ষা নিতে চায় বিশ্ববিদ্যালয়:


বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নানা সময়ে পরীক্ষা নেয়ার আবেদন তাদের কাছে আসছে।

কারণ তারা এখন চাকরির বাজারে ঢোকার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।

এছাড়া সেশন জট কমিয়ে আনাটাও একটা কারণ এই পরীক্ষা নেয়ার পিছনে।

এ কারণেই একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরুর তারিখ ঠিক করা হয়েছিলো এ বছরের ছাব্বিশে ডিসেম্বর।

কিন্তু এখন সুর নরম করে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বিবিসিকে বলছেন, "পরীক্ষার কোন ফাইনাল তারিখ দেয়া হয়নি। প্রতিটা বিভাগ তাদের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে, তাদের পরিস্থিতি বুঝে তারপর পরীক্ষার তারিখ ও রুটিন দেয়া হবে"।

ছাব্বিশ ডিসেম্বর তারিখটি ছিল উপাচার্যের চোখে একটি প্রস্তুতিমূলক সময়সূচী।

তবে হল না খোলার ব্যাপারে অনঢ় অবস্থানের কথা জানাচ্ছেন উপাচার্য।

তাহলে পরীক্ষা দিতে এসে কোথায় থাকবেন ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীরা?

উপাচার্যের ভাষায়, যেহেতু শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে আগ্রহী, তাই তারা নিজেদের থাকার একটা ব্যবস্থা নিশ্চয়ই করতে পারবে বলে তার আশা।

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার যে প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক
  • বাংলাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে সব ফি আদায় করা যাবেনা
  • নবম থেকে এসএসসি পর্যন্ত পাঁচজনের একজন ঝরে পড়ছে

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত মার্চ থেকে বন্ধ আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷

পরীক্ষা দিতে চান যারা:


সাদিয়া রহমান সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পর থেকেই তিনি যশোর জেলার নিজ বাড়ীতে অবস্থান করছেন।

তিনি বলছেন, "পরীক্ষা হয়ে গেলে অন্তত বিভিন্ন চাকরির পরিক্ষাগুলোতে অংশ নিতে পারবো। সেটার জন্য যদি পরীক্ষা হয় তাহলে ঢাকায় থাকার একটা ব্যবস্থা করতে হবে"।

যেভাবে নেয়া হতে পারে পরীক্ষা:


মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলছেন, সবার আগে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টা বিবেচনায় রাখতে হবে।

সেই বিবেচনায় পরীক্ষা অনুষ্ঠানের সময় অর্ধেক কমিয়ে আনা হবে বলে জানাচ্ছেন তিনি।

ভাবা হচ্ছে এক দিনে দুটো পরীক্ষা নেবার কথাও।

এছাড়া ইনকোর্স ও টিউটোরিয়াল পরীক্ষা অনলাইনের মাধ্যমে নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

উপাচার্যের ভাষায়, "স্বল্প সময়ের মধ্যে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে"।

তথ্য সূত্রঃ bbc.com

বাংলা একাডেমির ভার্চুয়াল বইমেলার সমালোচনায় প্রকাশক ও লেখকরা

 

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশে ২০২১ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলা স্থগিত করার যে সিদ্ধান্ত বাংলা একাডেমি নিয়েছে সেটির কড়া সমালোচনা করছেন লেখক ও প্রকাশরা।


তারা প্রশ্ন তুলছেন, বাংলাদেশে শপিং-মল, কলকারখানা এবং গণ-পরিবহন সহ সবই যেহেতু স্বাভাবিক নিয়মে চলছে, সেক্ষেত্রে কেন বই মেলা বন্ধ রাখা হবে?

বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা বলছেন, বইমেলা আয়োজনের জন্য তারা আরো আগে থেকেই প্রস্তুত নেয়া শুরু করেছিলেন।

তাদের আশা ছিল করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির হয়তো উন্নতি হবে।

কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বাংলা একাডেমি ভিন্ন চিন্তা করতে বাধ্য হয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম পরিচালক ড. জালাল আহমেদ।

"আমাদের নির্বাহী পরিষদ, বাংলা একাডেমির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী প্রতিষ্ঠান, সেটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় আপাতত বইমেলা স্থগিত থাকবে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমরা আবার বইমেলা শুরু করবো।"

তবে ফেব্রুয়ারি মাসে একটি ভার্চুয়াল বইমেলা আয়োজন করা যেতে পারে বলে মনে করছে বাংলা একাডেমি।

লেখক এবং প্রকাশকরা বলছেন, বইমেলার প্রকৃত আবহ ভার্চুয়াল বইমেলার মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব নয়।

ভার্চুয়াল বইমেলাকে সমর্থন করছেন না লেখক সাদিয়া নাসরিন।

লেখক সাদিয়া নাসরিন বলেন, "বইমেলা শুধু বই কেনা-বেচার জায়গা না। এখানে লেখক এবং পাঠকের মধ্যে যোগাযোগেরও জায়গা। এখানে আড্ডা হয়, গল্প হয়। এতবড় একটি জিনিস অনলাইনে করা সুন্দর বা সুখময় কিছু হবে বলে আমার মনে হয় না।"

প্রকাশকরা মনে করেন, একটু পরিকল্পনা গ্রহণ করলেই বইমেলা আয়োজন করা সম্ভব।


তথ্য সুএঃ bbc.com


মুজিব ভাস্কর্য: 'বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্ক চলবে না' - দেশজুড়ে আমলাদের সমাবেশ

ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে সব পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা এসব সমাবেশ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

ঢাকায় বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে বিসিএসের সব ক্যাডারদের -সরকারি কর্মকর্তা ফোরাম- সমাবেশের আয়োজন করে যাতে সভাপতিত্ব করেছেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস।

মিস্টার কায়কাউস তার বক্তৃতায় বলেন, "আমরা উনত্রিশটি ক্যাডার সার্ভিসের সবাই আজ অঙ্গীকার করছি যে জাতির পিতার অসম্মান আমরা হতে দিবোনা। জয় বাংলা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান। আমরা সবাই কেন বক্তৃতার শেষে জয় বাংলা বলবোনা। আশা করি আজ থেকেই শুরু করবো এবং প্রয়োজনে সরকারের অনুমতি নিবো"।

এতে পুলিশের আইজিপি বেনজির আহমেদসহ বিসিএস এর সবগুলোর ক্যাডারের অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিবরাসহ প্রায় সব পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা যোগ দিয়েছেন।

এমন সময় তারা এই প্রতিবাদ করছেন, যখন একদিন আগেই খবর বেরিয়েছে, ভাস্কর্যের বিরোধীতাকারী বিভিন্ন ইসলামি সংগঠনের নেতাদের সাথে একটি সমঝোতা বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছে সরকার।

সমাবেশে দেয়া বক্তৃতায় পুলিশের আইজিপি বেনজির আহমেদ বলেন, "স্বাধীনতা, সংবিধান, রাষ্ট্র ও জাতির জনক- নো বডি ক্যান টাচ দেম"।

"আমরা তাদের মোকাবেলা করবো। বঙ্গবন্ধু দেশ, পতাকা, মানচিত্র দিয়েছেন। তার ওপর হামলা সংবিধানের ও রাষ্ট্রের ওপর হামলা। রাষ্ট্র অবশ্যই বিধিবিধান অনুযায়ী কঠোর হস্তে মোকাবেলা করবে"।

বিসিএস অডিট ও অ্যাকাউন্টস এসোসিয়েশনের মহাসচিব গোলাম সারোয়ার ভুঁইয়া বলেন, "জাতির পিতাকে যারা অসম্মান করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ করছি"।

বিসিএস কর অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফজলে হায়াত কায়সার বলেন, "বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতোনা, আর বাংলাদেশ না হলে এত ক্যাডার সার্ভিস হতোনা। ভাস্কর্য যারা ভেঙ্গেছে তারা দেশবিরোধী, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি"।

বিসিএস শুষ্ক ও আবগারি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব কাস্টমস কমিশনার বলেন, "এখনো এ দেশে কিছু মানুষ দেখা যাচ্ছে যারা জাতির পিতাকে অশ্রদ্ধা করছেন। ভাস্কর্য ভাঙ্গার মতো দুঃসাহস দেখাচ্ছে। তাদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করছি"।

তিনি বলেন, "অনেক মুসলিম দেশে ভাস্কর্য আছে। আমরা কি তাহলে বেশি মুসলমান হয়ে গেছি। আসলে তারা স্বাধীনতার প্রতি আঘাত করতে চায়। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বঙ্গবন্ধু- এসব নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই"।


তথ্য সূএঃ bbc.com

Friday, May 15, 2020

আদমদীঘিতে শপিংমলে মানুষের উপচেপড়া ভীড়, স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেউ



আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : সরকারি ভাবে সীমিত সময় শপিংমল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে গৃহিত স্বাস্থ্যবিধি কেউ মানছেন না। ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রতিনিয়ত কাপড়, কসমেটিক, সেলুনসহ বিভিন্ন দোকানে শুরু হয়েছে মানুষের উপচে পড়া ভীড়। ফলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কার্যক্রম কাজে আসবে কিনা তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

বগুড়ার জেলার আদমদীঘিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণে উপজেলা ব্যাপি লকডাউন ঘোষনা করেন প্রশাসন। এরপর উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনীর তৎপরতায় সামাাজিক দুরত্ব বজায় রাখাসহ দোকানপাট ও যানবাহন সীমিত আকারে চলাচল করে। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকার লকডাউন শিথিল করলে গত তিনদিন যাবত আদমদীঘি সদর, সান্তাহার পৌরসভা, চাঁপাপুর, কুন্দগ্রাম, নসরতপুর, মুরইল, ছাতিয়ানগ্রাম, ছাতনি-ঢেকড়া, সাওইল বিহিগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার বাজার গুলোতে নারী,পুরুষ ও শিশুদের উপচেপড়া ভীড় শুরু হয়েছে। তারা মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। অধিকাংশ ক্রেতা ও বিক্রেতাগন মাস্ক ব্যবহার করছেন না। মাছ ও মাংস বাজারের চিত্রও অনুরুপ।

সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখেই বসানো হচ্ছে সাপ্তাহিক হাটবাজার। এদিকে দেশে করোনাভাইরাসে ক্রমেই মৃত্যু ও আক্রান্তে সংখ্য বৃদ্ধি পাওয়ার মূহুর্তে অত্র উপজেলা ব্যাপি স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলাচল করায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কার্যক্রম কাজে আসবে কিনা তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। উপজেলা নির্বাহি অফিসার একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ জানান, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য জনগনকে সচেতন করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এছাড়া ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চলছে। এরপরও কেউ সরকারি নির্দেশ অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Wednesday, April 22, 2020

করোনাভাইরাস: একেবারে ভিন্ন এক রমজানের অপেক্ষায় বিশ্বের ১৮০ কোটি মুসলিম




আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই মুসলমানের পবিত্রতম রমজান মাস শুরু হচ্ছে, কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এবার বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের যে ধরণের কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে রোজা পালন করতে হবে, তার নজীর ইতিহাসে বিরল।


বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই মুসলিমরা এবার প্রথামত আত্মীয়-পরিজন-প্রতিবেশিদের নিয়ে সন্ধ্যায় ইফতারি করতে পারবেন না এবং রাতে দল বেঁধে মসজিদে গিয়ে তারাবির নামাজ পড়তে পারবেন না।

“এমন এক পরিস্থতি অতীতে কখনো হয়েছে - আমার জানা নেই,“ ন্যাশনাল ইউনিভার্টি অব মালয়েশিয়ার গবেষক ফাইজাল মুসাকে উদ্ধৃত করে বলছে আল জাজিরা।

“দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ গেছে, অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগ এসেছে, কিন্তু অতীতের কোনো লেখালেখিতে বা সাহিত্যে বর্তমান পরিস্থিতির মত কিছু পাওয়া যায়না। যুদ্ধের সময়, দুর্যোগের সময়েও মুসলমানরা রমজানের সময় একসাথে হয়ে তাদের ধর্মীয় আচার পালন করেছে।“

ব্রিটেনে মুসলিমদের সবচেয়ে বড় সংগঠন মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন এক বিবৃতিতে বলেছে, “এবারের রমজান হবে মুসলমানদের জন্য একদম ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা, এবং পরিবর্তিত এই পরিস্থিতির সাথে তাদের খাপ খাইয়ে নিতে হবে।“

সন্দেহ নেই এবারের রমাজন মাস হয়তো মুসলিম ইতিহাসে একেবারে ভিন্ন, ব্যাতিক্রমী ঘটনা হিসাবে জায়গা পাবে।


মক্কা ও মদিনার মসজিদে তারাবি
ধর্মীয় আচার পালনে দিক-নির্দেশনার জন্য মুসলিম বিশ্বের একটি বড় অংশ যে দেশটির দিকে তাকিয়ে থাকে, সেই সৌদি আরব আজ (বুধবার) রমজান উপলক্ষ্যে বিধিনিষেধ কিছু শিথিল করেছে।

সৌদি বাদশাহ মক্কা ও মদিনায় মুসলমানদের দুই পবিত্রতম মসজিদে তারাবি নামাজের অনুমতি দিয়েছে বলে রিয়াদ থেকে রয়টরস বার্তা সংস্থা জানিয়েছে। তবে সাধারন নামাজিরা যেতে পারবেন না।

এছাড়া, সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে জারী করা কারফিউ সকাল ৯টা থেকে বিকলে পাঁচটা পর্যন্ত কিছুটা শিথিল থাকবে। তবে বিশ্বের বহু মুসলিশ দেশে সেই ছাড়টুকুও দেয়া হচ্ছেনা।

মিশরে রমজান মাসে জামাতে নামাজসহ যে কোন ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ। ইরানে আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেই রমজান মাসে জনগণকে জামাতে নামাজ না পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

জেরুজালেমে ইসলামের তৃতীয় পবিত্র মসজিদ আল আকসাতেও রমজানে নামাজ হবেনা শুধু দিনে পাঁচবার আজান হবে।



মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া সিঙ্গাপুর, ব্রুনেইতেও এখন মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার ওপর যে বিধিনিষেধ চলছে, রমজান মাসে তার কোনো ব্যাতিক্রম হবেনা।

যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অধিকাংশ দেশেই মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া এখন বন্ধ, এবং রমজান মাসে তার কোনো ব্যাতিক্রম এবার হবে - কোনো ইঙ্গিত নেই। ব্রিটেনে মসজিদগুলো রোজার সময় নামাজ, দোয়া-দরুদ, খুতবা ভিডিওতে লাইভ-স্ট্রিমিং করবে।

মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন রমজান উপলেক্ষে জন্য যে পরামর্শ জারী করেছে তাতে বলা হয়েছে - জামাতে নামাজ হবেনা, মসজিদের গিয়ে তারাবি হবেনা, এবং কোনো ইফতার পার্টি করা যাবেনা।

পাকিস্তান কিছুটা ব্যাতিক্রমী অবস্থান নিয়েছে। সেদেশে রোজার সময় তারাবি নামা অনুমোদন করা হয়েছে, তবে শর্ত দেওয়া হয়েছে নামজিদের একজনের সাথে আরেকজনের ছয় ফুট ব্যবধান রাখতে হবে।

বাংলাদেশে রমজান মাসে সামাজিক দূরত্ব শিথিল করা হবে কিনা, মসজিদে গিয়ে তারাবি নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হবে কিনা- তা এখনও নিশ্চিত নয়।



এবারের ইদও কি ভিন্ন হবে ?

রোজার শেষে মুসলমানরা কি এবার তাদের সেবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ইদুল ফিতর প্রথাগতভাবে উদযাপন করতে পারবে?

এখনও করোনাভাইরাসের সংক্রমণের যে গতি-প্রকৃতি তাতে ইদ উদযাপন কেমন হবে - তা নিয়েও বিস্তর সন্দেহ রয়েছে।

সৌদি গ্রান্ড মুফতি পাঁচদিন আগে ইঙ্গিত দিয়েছেন, এবারের ইদের নামাজও ঘরে বসে পড়তে হতে পারে।

ইন্দোনেশিয়ায় ইদের আগে শহর থেকে যে লাখ লাখ মানুষ তাদের গ্রামে যায়, তা এবার নিষিদ্ধ থাকবে।মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীও তার দেশে একই সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তাছাড়া, পুরো রমজান মাস ধরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে রাস্তায় যে মেলা হয়, তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ধর্ম পালনে, বিশেষ করে রোজা বা ইদে, এ ধরনের সামজিক বিচ্ছিন্নতা ইসলামের ঐতীহ্যের একেবারে পরিপন্থী। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিমকে এবার আপস করতে হচ্ছে।


রমজানের আদর্শ ক্ষতিগ্রস্ত হবেনা
ব্রিটেনে ইসলামি আইনের একজন বিশেষজ্ঞ ড. ইনাম আল বাদাওয়ী অবশ্য বিবিসিকে বলেছেন, রমজানের মূল আধ্যাত্মিক শিক্ষা-আদর্শ তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেনা।

“একসাথে জড় না হয়েও মানুষ রমজানের আধ্যাত্মিক আদর্শের অনেকটাই অর্জন করতে পারে। নানা দিকে মনোনিবেশ না করতে হলে বরঞ্চ বেশিই পারে।“

তিনি বলেন, “একসাথে মিলিত হওয়ার যে আনন্দ তা হয়তো এবার তেমন থাকবেনা, কিন্তু বিকল্প পন্থায় প্রিয়জনদের সাথে সেই যোগাযোগের রাস্তা তো তৈরি হচ্ছে।“



তথ্যসূত্র:bbc.com

Friday, April 17, 2020

যুগে যুগে মহামারীর ইতিকথা



করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। শেষ পরিণতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে আল্লাহ ভালো জানেন। তবে যুগে যুগে এ ধরনের মহামারী দেখা গেছে। এসব প্রাণঘাতী ব্যাধির মধ্যে রয়েছে জিকা ভাইরাস, ইবোলা, হলুদ জ্বর, কুষ্ঠরোগ, কালাজ্বর, বসন্ত, কলেরা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ম্যালেরিয়া, প্লেগ, যক্ষ্মা, টাইফয়েড, হাম ইত্যাদি। এসব রোগে মানবসমাজ বিপন্ন ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। মানুষ যখন আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয় তখন তাদের সরল সঠিক পথের সন্ধ্যান দিতে এ ধরনের মহামারী দেখা যায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘জহারাল ফাসাদু ফিল বাররি ওয়াল বাহরি বিমা কাসাবাত আইদিন্নাস।’ অর্থাৎ জলে-স্থলে যে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে তা মানুষের হাতের কামাই। এখন করোনা মহামারী দেখার পর মসজিদগুলোতে প্রার্থনা করা হচ্ছে।

বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে এসব নতুন নতুন রোগের প্রতিষেধক বের করেছেন। মানবসমাজ আল্লাহর ইচ্ছায় মহামারীকে বশীকরণ করার পন্থাও উদ্ভাবন করেছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ পর্যায়ে চীনের উহান শহর থেকে উত্থিত ‘করোনাভাইরাস কোভিড-১৯’ নতুন করে বিশ্বকে আকস্মিক সঙ্কটে ফেলে দিয়েছে। করোনাভাইরাসে গোটা বিশ্ব যখন আতঙ্কিত, তখন নতুন করে আলোচনায় আসছে অতীতের মহামারী ও সেগুলোর ধ্বংসাত্মক প্রভাব। গত শতাব্দীর দুটি বিশ্বযুদ্ধসহ পারমাণবিক বোমা বিশ্বকে করে রেখেছে মৃত্যুপুরী। বন্যা, খরা, অগ্ন্যুৎপাত, ভূকম্পন, সাইক্লোন, সুনামি, মহামারী পৃথিবীকে করেছে বিপর্যস্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, ২০১১-২০১৭ এই সাত বছরে বিশ্বব্যাপী ১৩০৭টি মহামারীর মতো ঘটনা ঘটছে। ভূতত্ত্ববিদ বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বলেছেন, ১০০ বছর পরপর প্রকৃতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে। পৃথিবীর অভ্যন্তরে রয়েছে বিশাল আকার প্লেট, যা প্রকৃতির নিয়মে অবিরত নড়াচড়া করছে। বলা হচ্ছেÑ প্রতি ১০০ বছর পরপর প্রকৃতির বড় পরিবর্তন ঘটছে।


এর ফলে মহামারী ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। গ্রামকে গ্রাম উজাড় হচ্ছে, হারিয়ে যাচ্ছে নগরসভ্যতা। লিখিতভাবে আমরা এসব মহামারী এবং মানবসভ্যতায় তার সুদূরপ্রসারী প্রভাবের নিদর্শন জানতে পারি। এমনকি মহাবিশ্বের বিস্ময়, মহাগ্রন্থ আল কুরআনে বিভিন্ন জাতির নাফরমানির কারণে মহামারীতে ধ্বংসের কথা জানা যায়। এখন মহামারীর কারণ ভাইরাস রোগ। ভাইরাস হলো এক প্রকার অতি ক্ষুদ্র অণুজীব। ভাইরাস অর্থ বিষ। আদিতে যেকোনো ধরনের বিষাক্ত পদার্থকে ভাইরাস বলা হতো। ভাইরাস আবিষ্কারের বহু আগে এই মহামারীতে শত শত নগরসভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা মিসরীয় মমির গায়ে বসন্তরোগের চিত্র পাওয়া গেছে। ইতিহাসের বহু পুরনো যুগে মিসরের ফেরাউনরা বিশ্বকে শাসন করত। এই গোষ্ঠী ধ্বংস হয়েছে গুটিবসন্তে। থুকিডাইসিসের রচনা থেকে আমরা জানতে পারি, পেলোপনেশিয়ান যুদ্ধ যখন সংঘটিত হয়েছিল গ্রিক নগররাষ্ট্র এথেন্স ও স্পার্টার মধ্যে, তখন টাইফাস মহামারীতে এথেন্সের জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ মারা যায়। এ কারণে স্পার্টার জয়লাভ করা সম্ভব হয়েছিল।

একসময় ‘দুনিয়ার বাতিঘর’ বলা হতো রোমকে। সেই রোম ১৬৫ থেকে ১৮০ খ্রিষ্টাব্দ মাত্র ১৫ বছরে জনমানবশূন্য হয়ে যায় গুটিবসন্তের মহামারীতে। সেই সময় রোমকে বলা হতো ‘ভূতের নগরী।’ এমনকি গোটা রোমে বাতি জ্বালানোর মতো কোনো মানুষ ছিল না। রাজপরিবারের সদস্যরাও এর কবল থেকে রেহাই পাননি। বিখ্যাত রোমান সম্রাট মার্কাস অরেলিয়াসের ভাই লুইসিয়াস ভেরাসও মারা যান মহামারীতে। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৩০ সালে ‘গ্রিসের ফুসফুস’ নামে খ্যাত এথেন্সে বসন্ত রোগে ৩০ হাজারের বেশি লোক মারা যায়, যা ওই শহরের ২০ শতাংশ মানুষ। ওই রোগটি অত্যন্ত সংক্রামক। এ ছাড়া বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়। ২৫০ খ্রিষ্টাব্দে সাইপ্রিয়ানের প্লেগ মহামারী বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে তোলে। এরপর পঞ্চম শতাব্দীতে এক দিকে যুদ্ধ, অপর দিকে মহামারী পরাক্রমশালী রোমান সাম্রাজ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। ষষ্ঠ শতাব্দীতে প্রথম ভাগে রোমান সাম্রাজ্যের পূর্ব অংশের সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ান সাম্রাজ্যকে প্রতাপশালী অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, বুবোনিক মহামারীতে তার মৃত্যু সে সম্ভাবনাকে শেষ করে দেয়। পরবর্তী দুই শতাব্দীতে এ প্লেগে প্রায় ১০ কোটি মানুষ মারা যায়। এই রোগ মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এটা ইতিহাসের সব চেয়ে ভয়ঙ্কর মহামারী হিসেবে গণ্য। লাশের দুর্গন্ধে আকাশ-বাতাস দূষিত হয়ে পড়েছিল। পশু-পাখি, কীটপতঙ্গও এতে মারা যায়। পঞ্চম শতকে ইরাক, ইরান তথা মেসোপটেমিয়া অঞ্চলে প্রায় দুই লাখ মানুষ মারা যায় প্লেগ রোগে। বলা হয়Ñ পারস্যের অর্ধেক মানুষ মারা যায় এই রোগে।

ষষ্ঠ শতকের প্রথমার্ধে পুরো দুনিয়ায় ৪০ শতাংশ মানুষ মারা গিয়েছিল প্লেগ রোগে। ৭৩৫-৭৩৭ এই দুই বছরে জাপানে এক-তৃতীয়াংশ মানুষ মারা যায়। একই সময় প্লেগ রোগে বাইজানটাইন সাম্র্রাজ্য ধ্বংস হয়। ১৬ শতকে মেক্সিকোতে ৮০ শতাংশ, ইতালিতে তিন লাখ মানুষ প্লেগ রোগে মারা যায়। দুনিয়াব্যাপী ইনফ্লুয়েঞ্জা, টাইফয়েড ও অজানা রোগে ৯০ শতাংশ মানুষ মারা গিয়েছিল। উনিশ শতকে ইনফ্লুয়েঞ্জা সারা দুনিয়া নাড়িয়ে দেয়। ১৩৩৪ সালে গ্রেট প্লেগ অভ্ লন্ডন হিসেবে স্বীকৃত প্লেগ আসে চীন থেকে। এরপর ইতালির কেবল ফ্লোরেন্স শহরেই মারা যায় ছয় মাসে ৯০ হাজার মানুষ। কয়েক বছরে এশিয়া-ইউরোপে মারা গিয়েছে পাঁচ কোটি মানুষ। প্লেগ রোগটি একটি জীবাণুবাহী ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট। এর সৃষ্টি কোথা থেকে, এর সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি। তবে আধুনিক বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইঁদুরের খাদ্য ও প্রস্রাব থেকে এই ভয়াবহ রোগটি হয়েছে।

এই রোগটির সম্ভবত এশিয়ায় উৎপত্তি এবং পরে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। এই মহামারীর কবলে পড়ে ১৪০০ শতাব্দীতে বিশ্বের জনসংখ্যা ৪৫০ মিলিয়ন থেকে ৩৫০-৩৭৫ মিলিয়নে নেমে আসে। পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে স্প্যানিশ বণিকরা নিয়ে আসে স্মল পক্স, বুবোনিক প্লেগ ও হামের রোগ জীবাণ্।ু ৯০ ভাগ আদিবাসী এসব রোগে মারা যায়। ১৫১৯ সালে বর্তমান মেক্সিকোতে স্মল পক্স বা গুটিবসন্ত ছড়িয়ে পড়লে দুই বছরে প্রাণ হারায় প্রায় ৮০ লাখ মানুষ। ১৫২০ সালে ইউরোপিয়ানদের সাথে আসা একজন আফ্রিকান দাস স্মল পক্স নিয়ে এলে গোটা অ্যাজটেক সাম্রাজ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে। এই মহামারী ঔপনিবেশিক শক্তি আমেরিকায় শুধু তরবারী দিয়ে হত্যা করেনি, রোগ-বালাইও নিয়ে এসে অসংখ্য মৃত্যুর কারণ হয়েছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলছে, ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে ইউরোপিয়ানদের বয়ে আনা জীবাণুর কারণেই আমেরিকার প্রায় পাঁচ কোটি ৬০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে।

১৬৩৩ সালে ফ্রান্স, ব্রিটেন ও নেদারল্যান্ডবাসীর মাধ্যমে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসে স্পল পক্স ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় দুই কোটি মানুষ মারা যায় বলে দাবি করেছিলেন ইতিহাসবিদরা। ১৬৬৫ সালের দ্য গ্রেট প্লেগ অব লন্ডনে এর জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মৃত্যুবরণ করে। ১৭৯৩ সালে আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ায় ‘ইয়েলো ফিভার’ মহামারী আকার ধারণ করে। এতে নগরের ১০ ভাগের একভাগ বা প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ মারা যায়। ১৮৫৫ সালের দিকে চীন, হংকং ও ভারতে প্রায় দেড় কোটি মানুষ প্লেগে মারা গেছে। ১৯১৮ সালে শুরু হওয়া স্প্যানিশ ফ্লুতে পৃথিবীতে মারা যায় পাঁচ কোটি মানুষ।

মহামারীর এ রকম বহু নিদর্শন পাওয়া যায় ইতিহাসে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে যুগে যুগে শত শত নগরসভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে। তেমনি ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৭২০ সালে দুনিয়াজুড়ে ২০ কোটি মানুষ প্লেগ রোগে মারা গিয়েছে। তার ১০০ বছর পর শুধু ভারতে ও পূর্ব এশিয়ায় কলেরা রোগে মারা যায় লাখ লাখ মানুষ এবং আফ্রিকা-ইউরোপে বসন্ত রোগে মারা যায় ৩৫ লাখ মানুষ। তারও ১০০ বছর পর দুনিয়াজুড়ে মারা যায় পাঁচ কোটি মানুষ। ১৮৬০ সালে বা আধুনিক যুগে প্লেগ ছড়ায় আবার। এতে চীন, ভারত ও হংকংয়ে এক কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ মৃত্যু মুখে পতিত হয়। পরে ১৮৯০ এর দশকে প্লেগের ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়। বিশ শতকের সবচেয়ে বড় প্লেগ মহামারী দেখা দেয় ১৯১০ সালে। তখন চীনের মাঞ্চুরিয়ায় দুই বছরে মারা যায় ৬০ হাজার মানুষ। বিশ্বজুড়ে ১৯১৮ সালে সূচিত, গ্রেট ফ্লু মহামারীতে দুই বছরে মারা যায় তিন কোটির মতো মানুষ। ১৯১৮ ও ১৯১৯ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জাতে বিশ্বব্যাপী মারা যায় প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ। ভয়াবহ এ রোগকে তখন নাম দেয়া হয় ‘স্প্যানিশ ফ্লু’। এটি ‘দ্য ইনফ্লুয়েঞ্জা প্যানডেমিক’ নামেও পরিচিত। গুটিবসন্তের টিকা আবিষ্কৃত হয়েছিল ১৭৯৬ সালে। টিকা আবিষ্কারের ২০০ বছর পরও এই রোগে হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ভারতে। ১৯৭০ সালে লক্ষাধিক মানুষ রাতারাতি আক্রান্ত হয়ে পড়ে। ১৯৭৫ সালে ভারত নিজেকে গুটিবসন্তমুক্ত ঘোষণা করতে সক্ষম হয়েছে। আমেরিকায় ১৯৫২ সালে পোলিও রোগে আক্রান্ত হয় ৬০ হাজার শিশু। এতে তিন হাজারের বেশি মারা যায়। প্রথম এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয় ১৯৮৪ সালে। এই ভাইরাসের কারণে এইডস রোগে সে বছর আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে মারা যায় পাঁচ হাজার ৫০০ জন। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৩৫ মিলিয়ন মানুষ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত। এ পর্যন্ত এইডসে মারা গেছে আড়াই কোটির মতো মানুষ।

সার্স বা সিভিয়ার অ্যাকিউট রেস্পিরেটরি সিনড্রোম ২০০২ সালের নভেম্বর থেকে ২০০৩ সালের জুলাইয়ের মাঝে ১৭টি দেশে ৭৭৮ জন মানুষের প্রাণ সংহার করেছিল। বিশ্বজুড়ে ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লু বা এইচ ওয়ান এন ওয়ান ফ্লুতে ১৮ হাজার ৫০০ জন মারা গেছে। এই রোগের মৃত্যুর সংখ্যা মোট পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার বলে ধারণা করা হয়। হাইতিতে ২০১০ সালে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের পর কলেরা মহামারীর রূপ নিলে ১০ হাজার মানুষ মারা যায়। ২০১২ সালে ভাইরাসজনিত রোগে মারা যায় দুই লাখ ২২ হাজার মানুষ। সে বছর পুরো বিশ্বে ব্যাকটেরিয়াবাহিত সংক্রামক রোগ যক্ষায় মারা যায় ১.৩ মিলিয়ন মানুষ। প্রতি বছর টাইফয়েড জ্বরে মারা যাচ্ছে দুই লাখ ১৬ হাজার। জিকা ভাইরাস উগান্ডার জিকা ফরেস্ট এলাকায় বানরের মধ্যে ১৯৪৭ সালে প্রথম ধরা পড়ে। ২০১৯ সালে এশিয়ার কয়েকটি দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বর। ছড়িয়ে পড়ে এতে ফিলিপাইনে প্রায় ৯০০ লোক মারা গেছে। বাংলাদেশের মতো থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়াতেও ছড়িয়ে পড়ে ডেঙ্গু।

করোনাভাইরাসটি ১৯৬০-এর দশকে প্রথম আবিষ্কৃত হয়। শব্দটি ল্যাটিন করোনা থেকে নেয়া হয়েছে যার অর্থ মুকুট। মনে করা হচ্ছেÑ সার্স বা ইবোলার চেয়ে অনেক বিপজ্জনক এটা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনাভাইরাসটি মানুষের দেহকোষের মধ্যে গঠন পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিচ্ছে এবং সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। এ কারণে এটি বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। করোনাভাইরাসের আরেক নাম কোভিড-১৯। এর অনেক প্রজাতি আছে। এর মধ্যে সাতটি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হয়েছেন, এ ভাইরাসটি একজন মানুষের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে দ্রুত ছড়াতে পারে। করোনাভাইরাস ফুসফুসের সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়াচ্ছে। সাধারণত ফ্লু বা ঠাণ্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে। করোনার প্রথম লক্ষণ হলোÑ শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া। এর সাথে সাথে থাকে জ্বর ও কাশি। দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যায়। হতে পারে নিউমোনিয়া। ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে পাঁচ দিন লাগে। প্রথম লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। তারপর দেখা দেয় শুকনা কাশি। এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট। এ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলোÑ যারা ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে বা ভাইরাস বহন করছে, তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। ডাক্তারের পরামর্শ হলো বারবার হাত ধোয়া, হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ না করা, ঘরের বাইরে গেলে মুখোশ পরা। অসুস্থ হলে মাস্ক পরতে হবে। আর নিজে অসুস্থ না হলেও অন্যের সংস্পর্শ এড়াতে মুখোশ বা মাস্ক পরুন। কেননা, চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের সংস্পর্শ এসে ১৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাসটি অন্যান্য শহর এবং চীনের বাইরে থাইল্যান্ড, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায়ও ছড়িয়ে পড়ে।

করোনাভাইরাস ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। এই ভাইরাস চীনের গণ্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, নেপাল, মালয়েশিয়া। ছড়িয়ে পড়েছে ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও আমেরিকাতেও।

একবার যদি ভাইরাসের উৎস প্রাণীকে শনাক্ত করা যায়, তাহলে রোগটি প্রতিষেধক তৈরি করা সহজ হবে। করোনাভাইরাসের সাথে জড়িত চীনের উহানে অবস্থিত, সমুদ্রের খাবারের পাইকারি বাজারের সাথে। কিছু সামুদ্রিক প্রাণী করোনাভাইরাস বহন করতে পারে। ওই বাজারে অনেক জীবন্ত তিমি থাকে। মুরগি, বাদুড়, খরগোস, সাপ এসব প্রাণী করোনাভাইরাসের উৎস হতে পারে। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়। তারা দাবি করেছেন, এই সংক্রমণ নিম্নমাত্রার হলেও দেড় কোটি, আর মাঝারি মাত্রার হলেও এক কোটি ৮০ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এই গবেষকরা বলছেন, একেবারে নি¤œমাত্রার মহামারী হলেও বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে আসতে পারে ২ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাদের মতে, সংক্রমণে বেশি মানুষ মারা যাবে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, জার্মানিসহ কয়েকটি দেশে। তাদের মতে, নিম্নমাত্রায় মহামারী হলে চীন ও ভারতে কয়েক মিলিয়ন করে মানুষ মারা যাবে।

Wednesday, April 15, 2020

আদমদীঘিতে ত্রাণের চাল চুরির সময় ট্রাক চালক-হেলপার আটক



আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি :জয়পুরহাটের আক্কেলপুর গুদাম থেকে বাঘাবাড়ী গুদামে সরকারি ত্রাণের চাল স্থানান্তর করার সময় বগুড়ার আদমদীঘিতে ট্রাক থেকে কৌশলে চাল চুরির সময় ১৫ বস্তা উদ্ধারসহ চালক ও হেলপারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টায় বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের আদমদীঘি উপজেলার আশা পেট্রোল পাম্প এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার জাফেরপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে ট্রাক চালক রায়হান আলী (২২) ও হেলপার আদমদীঘির সান্তাহার চা-বাগান নিউ কলোনীর আব্দুল জলিলের ছেলে আল-আমিন (১৯)। এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে চাপাইনবাবগঞ্জের আমনুরার পরিবহন ঠিকাদার মোয়াজ্জেম হোসেন বাদী হয়ে ৪ জনের বিরুদ্ধে আদমদীঘি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ জানায়, রাজশাহীর মেসার্স এলাহী এন্টাপ্রাইজ ও চাপাইনবাবগঞ্জের আমনুরার মেসার্স মোজাম্মেল হোসেন নামের দুইটি পরিবহন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গত মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-৩৪২৯ ও ঢাকা মেট্রো- ১৪-৯৭১৪ নম্বর দুইটি ট্রাকে আক্কেলপুর এলএসডি খাদ্যগুদাম থেকে সরকারি ত্রাণের ১৩৪২ বস্তায় ৪০ মেট্রিক টন চাল বোঝাই করে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি এলএসডি খাদ্যগুদামে স্থানান্তর করার জন্য রওয়ানা হয়। রাত ১০টায় বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের আদমদীঘি আশা পেট্রোল পাম্পের নিকট ট্রাক দুটি থামিয়ে কৌশলে চাল চুরি করছে। এ সংবাদের ভিক্তিতে পুলিশ ওই স্থানে অভিযান চালিয়ে চোরাইকৃত ১৫ বস্তায় ৪৫০ কেজি চাল উদ্ধার ও চালক রায়হান আলী ও হেলপার আল-আমিনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় অপর ট্রাকচালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। আদমদীঘি থানার ওসি জালাল উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বুধবার বিকেলে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয় এবং অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের তৎপরতা চলছে।



তথ্যসূত্র:protidinbanglarkhobor.com

Monday, March 30, 2020

জ্বর আছে শুনে স্বামীকে ঘর থেকে বের করে দিলেন স্ত্রী



বগুড়ার আদমদীঘিতে শরীরে জ্বর আছে শুনে স্বামীকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন স্ত্রী। সোমবার (৩০ মার্চ) ভোরে ট্রাকযোগে বাড়ি আসেন ওই ব্যক্তি। বাড়ি আসার পর তার শরীরে জ্বর রয়েছে এমন কথা শুনে স্ত্রী ঘর থেকে তাকে বের করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন।


জানা গেছে, আদমদীঘির কেশরতা গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে কাবিল উদ্দীন ঢাকা থেকে শরীরে জ্বর নিয়ে বাড়িতে আসেন। গায়ে জ্বর থাকায় স্ত্রী তাকে ঘর থেকে বের করে দেন। জ্বরের জন্য ঘর বের করে দেয়া ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস রয়েছে কিনা এ নিয়ে গতকাল সকাল থেকে গ্রামে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এদিকে একই গ্রামের দুবাই ফেরত দুই ব্যক্তি গত ২০ মার্চ থেকে গ্রামে এসে আত্মগোপনে রয়েছেন।


বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানকে জানালে গতকাল তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ানের শরণাপন্ন হন। এরপর মেডিকেল টিম নিয়ে কেশরতা গ্রামে যান।
পরে ওই তিন পরিবারের সবাইকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে বাড়িগুলোতে লাল পতাকা উড়িয়ে দেয়া হয়। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা তিন পরিবারের ১৪ দিনের খাবার দায়িত্ব নেন ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান।

Thursday, March 19, 2020

করোনার চিকিৎসার ভয়ে চাকরি ছাড়লেন ৮৪ চিকিৎসক!



বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে। মানুষ থেকে মানুষের ছড়িয়ে পড়ছে এ ভাইরাস। অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে যথাযথ সুরক্ষা উপকরণ না থাকায় চাকরি ছেড়েছেন বুলগেরিয়ার ৮৪ ডাক্তার!

বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ার দুইটি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে বলে বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
খবরে বলা হয়েছে, হাসপাতালে ডাক্তারদের সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত দ্রব্যবাদী না থাকায় ওই ডাক্তার ও নার্সরা কর্তৃপক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র দেন।
সোফিয়ার দুই হাসপাতাল থেকে চাকরি ছাড়া এক ডাক্তার ক্যামেলিয়া বাচোভস্কি বলেন, আমিসহ আমার ৮৪ সহকর্মী পদত্যাগপত্র দিয়েছি। কর্তৃপক্ষ আমাদের জানালো, আমাদের করোনার রোগীদের চিকিৎসা দিতে হবে। কিন্তু আমাদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা নেই।
তিনি বলেন, আমাদের বেশিরভাগ ডাক্তার বয়স্ক এবং অবসরে যাওয়ার প্রাক্কালে রয়েছেন। করোনায় বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা সুরক্ষা ছাড়া করোনা রোগীদের কী করে চিকিৎসা দেব।


তথ্যসূত্র: somoynews.tv

করোনাভাইরাস: সংক্রমণের কারণে 'লকডাউন' করা হলো মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা



করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলাকে 'লকডাউন' করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

শিবচর উপজেলার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শামসুদ্দিন খান বিবিসি বাংলাকে বলেন, শিবচর উপজেলায় শুধু ঔষধের দোকান এবং অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা থাকবে। এছাড়া বাকি সবকিছু বন্ধ থাকবে।

মি. খান বলেন, পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত এই লকডাউন চলবে। এ সময়ের মধ্যে শিবচর উপজেলায় থেকে কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না এবং সেখান থেকে বেরও হতে পারবেন না।

মানুষ যাতে অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে রাস্তায় পুলিশী টহল থাকবে। অতি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রাস্তায় পাওয়া গেলে জেল-জরিমানা করা হবে বলে জানান তিনি।

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম জায়গা যেখানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য লকডাউন করা হলো।

এই উপজেলায় সম্প্রতি ৬৩৯ মানুষ ইটালি, গ্রিস, স্পেন কিংবা জার্মানি থেকে এসেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

শিবচর উপজেলা লকডাউন করা হতে পারে - এমন ইঙ্গিত বিকেলেই দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত যাদের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হয়েছে তারা মাদারীপুর, ফরিদপুর এবং শিবচর এলাকার বাসিন্দা।

"দুই একটা এলাকার কথা আমাদের খবরে আসে। তার মধ্যে হলো মাদারীপুর এরিয়া, ফরিদপুর এরিয়া বা ঐ শিবচর এরিয়া। এ সমস্ত এরিয়াতে বেশি করে দেখা দিচ্ছে। যদি অবনতি ঘটে, তাহলে পরে আমরা লকডাউনের দিকে যাব," সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, এসব এলাকায় তুলনামূলকভাবে বেশি আক্রান্তের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যে ১৭ জনের দেহে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই এসব এলাকার বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

"আমরা যেটা খবর পাই, ওখানকার লোক কোয়ারেন্টিনেও বেশি, বিদেশে থাকেও বেশি। সেজন্য এসব জায়গাকে আমরা মোর ক্রিটিক্যাল (বেশি ঝুঁকিপূর্ণ) মনে করি। আগামীতে যদি ওখানে সত্যিই বেড়ে যায়, তাহলে আমরা লকডাউন করবো," বলেন মি. মালেক।

সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে যে মাদারীপুর এবং ফরিদপুরের বহু বাসিন্দা ইতালি প্রবাসী। ইতালিতে করোনাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার সময় অনেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, পুরো বাংলাদেশে এখন ৫০০০'র বেশি মানুষকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।


তথ্যসূত্র: bbc.com

আদমদীঘিতে পুলিশের করোনা বিষয়ে সর্তকতামূলক লিফলেট বিতরণ


আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড় করোনা ভাইরাস সম্পর্কে গনসচেতনতা সৃষ্ঠির লক্ষে বগুড়ার আদমদীঘি থানা পুলিশের উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার এরশাদুল হক এরশাদ ও থানার অফিসার ইনচার্জ জালাল উদ্দীনের নেতৃত্ব পুলিশ আদমদীঘি সদর বাসস্ট্যান্ড, সান্তাহার পৌরসভাসহ বিভিন্ন জনবহুল গুরুত্বপূর্ন এলাকায় জেলা পুলিশ সুপার প্রদত্ত করোনা সম্পর্কে জনগনকে সচেতন করতে এই লিফলেট বিতরণ করা হয়। লিফলেট বিতরণ কালে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক, সান্তাহার ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আনিছুর রহমানসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ গ্রহন করেন।

কীটনাশক পান করে কিশোরীর মৃত্যু


বগুড়ার আদমদীঘির বিহিগ্রামে কীটনাশক পানে সাদিয়া পারভিন (১৩) নামের এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। সাদিয়া ওষুধ ভেবে ভুল করে জমিতে দেয়া কীটনাশক পান করে বলে স্বজনরা জানান। এ ঘটনায় আদমদীঘি থানায় ইউডি মামলা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সাদিয়া পারভিন উপজেলার চাঁপাপুর ইউপির বিহিগ্রামের আইয়ুব হোসেনের মেয়ে। গত ১৫ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাদিয়া ভুল করে বাড়ীতে থাকা কীটনাশক পান করে। এরপর তাকে প্রথমে আদমদীঘি ও পরে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার মাধ্যমে কিছুটা সুস্থ হলে সোমবার দুপুরে চিকিৎসক ছাড়পত্র দেন। বাড়িতে আনার পর মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সাদিয়া মারা যায়।
আদমদীঘি থানার ওসি জালাল উদ্দীন জানান, কিশোরী মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।


তথ্যসূত্র:kalerkantho.com

Wednesday, March 18, 2020

বাংলাদেশে করোনায় প্রথম একজনের মৃত্যু



করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো একজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৮ মার্চ) বিকেলে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের জন্য একটি দুঃসংবাদ আছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি পুরুষ, তার বয়স ৭০। ওই ব্যক্তি খুবই উচ্চ-ঝুঁকির মধ্যে ছিলেন। ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, ফুসফুসের সমস্যা ও কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত ছিলেন। তার হৃদযন্ত্রের সমস্যা ছিল। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বিদেশে যান নাই, কিন্তু বিদেশ ফেরত ব্যক্তির মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন।
ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা আরো বলেন, সংক্রমণ রয়েছে এই সন্দেহে ১৬ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৪২ জন। যে চারজন নতুন রোগী সংযোজিত হয়েছে; এদের মধ্যে একজন নারী, তিনজন পুরুষ। তাদের মধ্যে একজন পূর্বে আক্রান্ত এক ব্যক্তির পরিবারের সদস্য। বাকি তিনজন বিদেশ থেকে ভ্রমণ করে এসেছেন। এদের মধ্যে দুইজন ইটালি থেকে এসেছেন, আরেকজন কুয়েত থেকে এসেছেন।
করোনা প্রতিরোধে সাবধানতার পাশাপাশি জনসমাবেশ বন্ধের আহ্বানও জানান আইইডিসিআরের এ পরিচালক। বিপণী বিতান, শপিংমলে না যেতেও অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে, সংক্রমণ বেড়ে দেশের করোনা পরিস্থিতি এখন ‘কমিউনিটি ট্রান্সমিশন’ পর্যায়ে রয়েছে এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই বলে জানান সেব্রিনা ফ্লোরা। এখন পর্যন্ত সবই পারিবারিক সংক্রমণ ঘটেছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।

Monday, March 16, 2020

করোনায় আক্রান্তদের বাড়ি ভাড়াসহ সব দায়িত্ব নিলেন জাস্টিন ট্রুডো



কানাডায় করোনা আক্রান্তদের বাড়ি ভাড়া থেকে শুরু করে জনগণের সব দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডার সংবাদমাধ্যম সিটিনিউজ১১৩০ এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো নিজে ও তার স্ত্রী সোফিয়া ১৪ দিনের আইসোলেশনে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর শরীরের এখনো করনো ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেনি। এছাড়া স্ত্রী সোভি করোনায় আক্রান্ত হলেও তার অবস্থা স্থিতিশীল।
এর মধ্যে ট্রুডো ঘোষণা দিয়েছেন, করোনা মোকাবিলায় খুব শিগগিরই তার সরকার ‘সিগনিফিক্যান্ট ফিসক্যাল স্টিমুলাস’ নামে একটি বিশেষ প্যাকেজ চালু করতে যাচ্ছে। এ প্যাকেজটি গত সপ্তাহে ঘোষণা দেয়া ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অতিরিক্ত।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, কোভিড-১৯-এর কারণে বাড়ি ভাড়া, মুদি কেনাকাটা বা শিশুদের অতিরিক্ত সেবায় অর্থ খরচ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। আমরা কানাডিয়ানদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করব।
তিনি আরও বলেন, আপনারা নিজের স্বাস্থ্য, পরিবারের স্বাস্থ্য, চাকরি, সঞ্চয়, বাড়ি ভাড়া, ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো নিয়ে চিন্তিত আছেন। আমি জানি, (করোনার কারণে) বৈশ্বিক অর্থনীতির কারণে আপনার অনিশ্চয়তায় আছেন। আপনাদের নিরাপদ রাখতে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তাতে দেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়বে। তবে এটা সত্য যে, আমরা অর্থনৈতিকভাবে এখন যে অবস্থানে আছি তা আপনাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিতে যথেষ্ট।
আমরা মানি যে আমাদের আরও অনেক কিছু করণীয় রয়েছে। আমরা চাই না কোনো কানাডিয়ান বাড়ি ভাড়া দিতে পারবেন কি-না, বাজার-ঘাট করতে পারবেন কি-না, বা তাদের ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করতে পারবেন কি-না, এটা নিয়ে চিন্তা করুক,’ যোগ করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কানাডায় ৩৪১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ১১ জন।


তথ্যসূত্র:প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো নিজে ও তার স্ত্রী সোফিয়া ১৪ দিনের আইসোলেশনে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর শরীরের এখনো করনো ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেনি। এছাড়া স্ত্রী সোভি করোনায় আক্রান্ত হলেও তার অবস্থা স্থিতিশীল।
এর মধ্যে ট্রুডো ঘোষণা দিয়েছেন, করোনা মোকাবিলায় খুব শিগগিরই তার সরকার ‘সিগনিফিক্যান্ট ফিসক্যাল স্টিমুলাস’ নামে একটি বিশেষ প্যাকেজ চালু করতে যাচ্ছে। এ প্যাকেজটি গত সপ্তাহে ঘোষণা দেয়া ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অতিরিক্ত।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, কোভিড-১৯-এর কারণে বাড়ি ভাড়া, মুদি কেনাকাটা বা শিশুদের অতিরিক্ত সেবায় অর্থ খরচ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। আমরা কানাডিয়ানদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করব।
তিনি আরও বলেন, আপনারা নিজের স্বাস্থ্য, পরিবারের স্বাস্থ্য, চাকরি, সঞ্চয়, বাড়ি ভাড়া, ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো নিয়ে চিন্তিত আছেন। আমি জানি, (করোনার কারণে) বৈশ্বিক অর্থনীতির কারণে আপনার অনিশ্চয়তায় আছেন। আপনাদের নিরাপদ রাখতে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তাতে দেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়বে। তবে এটা সত্য যে, আমরা অর্থনৈতিকভাবে এখন যে অবস্থানে আছি তা আপনাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিতে যথেষ্ট।
আমরা মানি যে আমাদের আরও অনেক কিছু করণীয় রয়েছে। আমরা চাই না কোনো কানাডিয়ান বাড়ি ভাড়া দিতে পারবেন কি-না, বাজার-ঘাট করতে পারবেন কি-না, বা তাদের ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করতে পারবেন কি-না, এটা নিয়ে চিন্তা করুক,’ যোগ করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কানাডায় ৩৪১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ১১ জন।


তথ্যসূত্র:প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো নিজে ও তার স্ত্রী সোফিয়া ১৪ দিনের আইসোলেশনে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর শরীরের এখনো করনো ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেনি। এছাড়া স্ত্রী সোভি করোনায় আক্রান্ত হলেও তার অবস্থা স্থিতিশীল।
এর মধ্যে ট্রুডো ঘোষণা দিয়েছেন, করোনা মোকাবিলায় খুব শিগগিরই তার সরকার ‘সিগনিফিক্যান্ট ফিসক্যাল স্টিমুলাস’ নামে একটি বিশেষ প্যাকেজ চালু করতে যাচ্ছে। এ প্যাকেজটি গত সপ্তাহে ঘোষণা দেয়া ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অতিরিক্ত।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, কোভিড-১৯-এর কারণে বাড়ি ভাড়া, মুদি কেনাকাটা বা শিশুদের অতিরিক্ত সেবায় অর্থ খরচ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। আমরা কানাডিয়ানদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করব।
তিনি আরও বলেন, আপনারা নিজের স্বাস্থ্য, পরিবারের স্বাস্থ্য, চাকরি, সঞ্চয়, বাড়ি ভাড়া, ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো নিয়ে চিন্তিত আছেন। আমি জানি, (করোনার কারণে) বৈশ্বিক অর্থনীতির কারণে আপনার অনিশ্চয়তায় আছেন। আপনাদের নিরাপদ রাখতে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তাতে দেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়বে। তবে এটা সত্য যে, আমরা অর্থনৈতিকভাবে এখন যে অবস্থানে আছি তা আপনাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিতে যথেষ্ট।
আমরা মানি যে আমাদের আরও অনেক কিছু করণীয় রয়েছে। আমরা চাই না কোনো কানাডিয়ান বাড়ি ভাড়া দিতে পারবেন কি-না, বাজার-ঘাট করতে পারবেন কি-না, বা তাদের ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করতে পারবেন কি-না, এটা নিয়ে চিন্তা করুক,’ যোগ করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কানাডায় ৩৪১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ১১ জন।



তথ্যসূত্র:somoynews.tv

ইতালি যেন মৃত্যুপুরী, একদিনেই করোনা কেড়ে নিল ৩৬৮ প্রাণ



ইতালিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে একদিনে নতুন করে আরও অন্তত ৩৬৮ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ হাজার ৮০০ জন। আক্রান্ত প্রায় ২৪ হাজার ৭৫০ জন।

দেশব্যাপী করোনা ছড়িয়ে পড়ায় এবার বন্ধ করে দেয়া হলো ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। ইতালির জাহাজ নির্মাণ শিল্পের প্রায় ২০ শতাংশের উপরে মালিকানা প্রবাসী বাংলাদেশিদের।
ইতালিতে এবার দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ করে দেয়া হলো বড় বড় সব শিল্প প্রতিষ্ঠান। সোমবার থেকে আগামী ২৯ মার্চ পর্যন্ত তা বন্ধ থাকবে। উত্তর ইতালির মদেনায় অবস্থিত ফেরারি, ভেনিস, মন ফালকনে, নাপলী, আনকোণায় অবস্থিত খ্যাতিমান জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলোসহ সমগ্র ইতালির অধিকাংশ ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান এর আওতায় পড়েছে।
দেশটিতে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের প্রায় ২০ শতাংশের উপরে মালিকানা বাংলাদেশি প্রবাসীদের। বিলিয়ন ইউরোর এসব প্রতিষ্ঠানে সমগ্র ইতালিতে কর্মরত প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি।
এখন কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের পাশাপাশি বাংলাদেশিদেরও থাকতে হবে হোম কোয়ারেন্টাইনে।


তথ্যসূত্র:somoynews.tv

আদমদীঘিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ভ্যান চালকের মৃত্যু


বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে চার্জার ভ্যানের চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে হারুন অর রশিদ (৫১) নামের এক ভ্যানচালক মারা গেছেন। গত শনিবার রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হারুনের বাড়ি সান্তাহার পৌর এলাকার পোঁওতা মহল্লায়।

পরিবারের সদস্যরা জানান, বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হওয়ার পর হারুনকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আব্দুল ওয়াদুদ ভ্যানচালকের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।


তথ্যসূত্র:www.kalerkantho.com

করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে দুই শিশুসহ আরো তিন জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত



বাংলাদেশে আরো তিন জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৮ জনে।

এই আক্রান্তদের মধ্যে এক নারী ও দুই শিশু রয়েছেন। এরা দ্বিতীয় দফায় শনাক্ত হওয়া দুজনের মধ্যে এক জনের পরিবারের সদস্য। ওই দুজনেই সম্প্রতি বিদেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন।

নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা একথা জানান।

মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, "একজন রোগীর পরিবারের সদস্য ছিল। তাদের যেহেতু কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করার সময় ওই রোগীর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উপসর্গ পাওয়া যায়। পরে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হলে ওই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়"।

নতুন আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এদের লক্ষণ-উপসর্গ মৃদু। তাদের শারীরিক অবস্থা ভাল। কিন্তু তাদের কাছ থেকে যাতে অন্যদের মধ্যে জীবাণু ছড়িয়ে না পড়ে তা ঠেকাতে তাদেরকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে তিন জন সেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। আর বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন ৫ জন।

এছাড়া এখনো আইসোলেশনে রয়েছেন আরো ১০ জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের রয়েছেন ৪ জন।

যারা বাইরে থেকে আসছে তারা যাতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের থেকেও দূরত্ব বজায় রাখেন সে বিষয়ে আবারো অনুরোধ জানানো হয়।

নমুনা দিতে বা করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ নিয়ে সেবা পেতে কাউকে আইইডিসিআর এর কার্যালয়ে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

এর পরিবর্তে হটলাইনে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রয়োজন মনে হলে আইইডিসিআরের সদস্যরাই গিয়ে নমুনা পরীক্ষা করবেন বলে জানান তিনি।

তথ্যসূত্র:bbc.com

করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে স্কুল-কলেজ দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ



করোনাভাইরাসের সতর্কতার অংশ হিসেবে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রনালয়।

এর আগে করোনাভাইরাসের সতর্কতার অংশ হিসেবে দশ দিনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

আগামী বুধবার থেকে শুরু হয়ে ২৮শে মার্চ পর্যন্ত টানা ১০ দিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ চেয়ে অনশন ও মানববন্ধন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষার্থীরা। অনেক বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন কর্মসূচীও পালন করে।

বিস্তারিত আসছে....


তথ্যসূত্র: bbc.com

Saturday, March 14, 2020

যে কারণে আমেরিকায় করোনার ঝুঁকি বেশি


আমেরিকাজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১৩ মার্চ হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন তিনি। এর আগে ইউরোপীয় দেশ থেকে আমেরিকায় ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন ট্রাম্প।

সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সময় করোনা ঠেকাতে ৫০ বিলিয়ন ডলার সাহায্য তহবিল ঘোষণা করেন ট্রাম্প। আমেরিকায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৭০১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৪০ জন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে বা ঝুঁকি সত্ত্বেও অনেক মানুষ চিকিৎসকের কাছে যাবেন না। কারণ আমেরিকায় ১০ মিলিয়নের বেশি মানুষের স্বাস্থ্যবিমা বা এ দেশে থাকার বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। তাই তাঁরা দরকার থাকলেও স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছে না। এ কারণে এই দেশের প্রতিটি মানুষ করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন।

সেবাস্তিয়ান নামের এক ব্যক্তির হাতের ত্বক শুষ্ক হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ফেটেও গেছে। হাত অতিরিক্ত ধোয়ার কারণেই এমন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় হাত ধুয়ে নিই। এটা এখন অভ্যাস। কারণ ছোটবেলা থেকে জানি, যদি আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি, তাহলে কোনো চিকিৎসকের কাছে যেতে পারব না।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, সেবাস্তিয়ান মাত্র তিন বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে মেক্সিকো থেকে আমেরিকায় আসেন। আমেরিকায় বৈধ কাগজপত্রবিহীন প্রায় ১১ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে এই সেবাস্তিয়ান একজন। আমেরিকার নাগরিকত্ব নেই মানেই দেশটিতে স্বাস্থ্যসেবার কোনো সুযোগ নেই।

সেবাস্তিয়ান বলেন, ‘আমি চিকিৎসকের কাছে যাই না। যদি কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ি, তাহলে মা ঘরেই নানা টোটকা দিয়ে তা সারিয়ে তোলার চেষ্টা করতেন। বেশি অসুস্থ হলেই স্কুল ফাঁকি দিতে হতো।’

সম্প্রতি সেবাস্তিয়ানের এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে সেবাস্তিয়ান বলেন, সব খবরই তাঁর পরিবারের সদস্যরা দেখছে। কিন্তু বাস্তবে তাঁদের কিছুই করার নেই। তিনি বলেন, ‘বৈধ কাগজপত্রবিহীন হওয়ায় মেডিকেলে যাওয়াটা অনেক কঠিন এখানে। তারপরও যদি যেতে হয়, তাহলে দেশ থেকে বহিষ্কার করে দেওয়ার ঝুঁকি থাকে। আমার পরিবার অপরাধী নয়, তবে এটা ঠিক আমাদের বৈধ কাগজপত্র নেই। এ কারণেই আমাদের চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটা অনেক ভয়ের ব্যাপার।’

আমেরিকায় বৈধ কাগজপত্র থাকুক আর না থাকুক, যে কারও জন্যই দেশটিতে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটা অনেক ব্যয়বহুল ব্যাপার। আমেরিকায় প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ মানুষের কোনো স্বাস্থ্যবিমা নেই। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ সময় নানা কারণে সংখ্যাটা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। আর স্বাস্থ্যবিমা ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে তাদের খরচ হয় কয়েক শ ডলার।

২৮ বছর বয়সী লিসা রুবিও চাকরি করার কারণে স্বাস্থ্যবিমা সুবিধা পান। তিনি বলেন, ‘ফ্লুর সময়ে আমরা অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ি। এ ক্ষেত্রে আমার শিশু সন্তানকে চেক করার জন্য প্রতিবার চিকিৎসককে ১০০ ডলার করে দিতে হয়। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগে কাশির কারণে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু চিকিৎসক বলেছেন, এটা ভাইরাসের কারণে। তাই কোনো ওষুধ প্রেসক্রাইব করা যাচ্ছে না। চিকিৎসক প্রেসক্রাইব না করলেও কিন্তু বিমা থেকে তাঁর বিল কেটে নেওয়া হবে।

গত বছর পর্যন্ত লিসার কোনো স্বাস্থ্যবিমা ছিল না। গত বছরই লিসা এ কারণে মহাবিপদে পড়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। বুকে খুব ব্যথা হয়েছিল। কিন্তু আমার বিমা সুবিধা ছিল না। তাই অর্থ খরচের ভয়ে এই ব্যথা বারবার এড়িয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু এর দুই সপ্তাহ পর একদিন মধ্যরাতে আমার ফুসফুস কাজ করা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিল। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে আমাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। সে সময় চিকিৎসক বলেছিলেন, ব্যথা নিয়ে যদি আগেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতাম তাহলে এমনটা হতো না।’
আমেরিকায় জনস্বাস্থ্য কর্মীদের যেকোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। করোনার এই সংকটের কারণে তা আরও বহুগুণ বেড়ে যাবে। এ ছাড়া আমেরিকায় এ ধরনের কোনো কর্মীকে বেতনসহ অসুস্থতাজনিত ছুটি দেওয়ার বিধান নেই।

দাতব্য সহায়তায় পরিচালিত একটি মোবাইল ক্লিনিকের পরিচালক ও চিকিৎসক রবি গ্রাভোস শাহ বলেন, ‘আমি রোগীদের নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। কারণ তাঁরা অসুস্থ অবস্থায় এসে সামান্য চিকিৎসা নিয়েই আবার কর্মক্ষেত্রে ফিরে যান। কারণ এ ছাড়া তাঁদের আর কোনো উপায় নেই। তাঁদের খাবারসহ যাবতীয় খরচের অর্থ জোগানেরও ওই কাজ ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। করোনাভাইরাসের এই সময়েও এই পরিস্থিতির হয়তো কোনো পরিবর্তন হবে না।’

টাকসন এলাকায় দাতব্য সহায়তায় পরিচালিত এই মোবাইল ক্লিনিকে সপ্তাহে প্রায় ৫০ জন রোগীর চিকিৎসা করানো হয়। যারা অন্য মেডিকেলে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য রাখেন না, তাঁরাই এই ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন।

রবি গ্রাভোস শাহ আরও বলেন, করোনাভাইরাস আসার আগে অসংখ্য রোগী এইচআইভি ও অন্যান্য যৌন রোগের লক্ষণ থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা করাননি। স্বাস্থ্যবিমা সুবিধা নেই বলেই তাঁরা এই জটিল রোগ নিয়েও তা এড়িয়ে গেছে। ফলে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আমেরিকায় জনস্বাস্থ্য সংকটের এটা একটা বড় উদাহরণ হতে পারে। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের মতো ভয়াবহ এই ভাইরাস আসার পরও এই পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই করোনাভাইরাসের সময়ও কোটি মানুষ স্বাস্থ্যবিমা নেই বলে চিকিৎসা না নেয়, তাহলে এর পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে। হয়তো আমেরিকার প্রতিটি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবেন।

তথ্যসূত্র:prothomalo.com

করোনাভাইরাস: বাংলাদেশে আরো দু'জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত, ইউরোপ থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ স্থগিত



আগামীকাল (রবিবার) মধ্যরাত থেকে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত ইংল্যান্ড বাদে ইউরোপের সব দেশ থেকে বাংলাদেশে যাত্রী প্রবেশ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

শনিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

এর আগে ঐ একই সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক নিশ্চিত করেন যে বাংলাদেশে আরো দু'জন নতুন ব্যক্তির মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তবে কোথায় বা কারা সনাক্ত হয়েছেন তা বলা হয়নি। শুধু জানানো হয়েছে, এরা দুজনই বিদেশ থেকে এসেছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "ভারত, সৌদি আরবের মত অনেক দেশই তাদের দেশে বিদেশ থেকে যাত্রী প্রবেশ স্থগিত করেছে।"

"ইংল্যান্ড বাদে ইউরোপের সব দেশ এবং যেসব দেশে করোনভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অস্বাভাবিকভাবে বেশি সেসকল দেশ থেকে সব যাত্রী বাংলাদেশে আসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।"

তিনি বলেন, "বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখন ইউরোপকে করোনাভাইরাসের এপিসেন্টার হিসেবে চিহ্নিত করায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।"

তবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অস্বাভাবিক বেশি থাকার কারণে ইউরোপের বাইরে অন্যান্য মহাদেশের কোনো নির্দিষ্ট দেশকে চিহ্নিত করা হয়েছে কিনা, সেবিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি পররাষ্ট্র মন্ত্রী।

কিন্তু সেসব দেশ থেকে আসা বিদেশী যাত্রীর পাশাপাশি বাংলাদেশি নাগরিকদেরও ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতেই হবে বলে জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রী।

রোববার রাত থেকে শুরু করে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণের পর এবিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানান পররাষ্টমন্ত্রী আবদুল মোমেন।

এছাড়া যেসব দেশ বাংলাদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে তাদের দেশে যাওয়া বাতিল করেছে, সেসব দেশের নাগরিকদেরও বাংলাদেশে প্রবেশ স্বল্পকালীন সময়ের জন্য স্থগিত করা হবে বলে জানান তিনি।

পররাষ্টমন্ত্রী আরো বলেন, "আমার অনেকগুলো দেশকে অন অ্যারাইভাল ভিসা দিয়ে থাকি। আগামী দু্ সপ্তাহের জন্য সেসব দেশের অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা স্থগিত করা হবে।"

এসব সিদ্ধান্ত এরই মধ্যে দূতাবাসগুলোকে জানারন্ হয়েছে এবং এর বাস্তবায়নের স্বার্থে নীতিমালা নির্ধারণ করার কাজ চলছে।


তথ্যসূত্র:www.bbc.com

Thursday, March 12, 2020

SpaceX could launch its first astronauts in under two months


This SpaceX illustration shows Crew Dragon with its thrusters firing.

SpaceX


It's been nearly a decade since astronauts last began begun a journey to space from American soil, and now SpaceX says they hope to change that this May.

Elon Musk's rocket company has been working toward launching astronauts to the International Space Station aboard its Crew Dragon spacecraft as part of NASA's Commercial Crew program. On Tuesday, SpaceX Chief Operating Officer Gwynne Shotwell said it's "gunning for May" for the company's first ever launch of humans atop one of its Falcon 9 rockets.

Shotwell was speaking to reporters Tuesday at the Satellite 2020 conference in Washington, D.C., CNBC reported. The conference has since been cut short by concerns over coronavirus and closed early on Wednesday.

The pioneering Crew Dragon launch is currently set for May 7 from Florida's Kennedy Space Center, according to industry website SpaceFlight Now. NASA astronauts Doug Hurley and Bob Behnken will make the journey to the ISS aboard the new spaceship, which has already successfully flown to the ISS and back with a dummy aboard.

In his own appearance at Satellite 2020 Monday, Musk said that SpaceX and NASA engineers have put Crew Dragon through a "staggering" amount of testing in preparation for carrying its first crew.


If it succeeds in May, the Crew Dragon mission will come just as NASA is running out of orbital flights booked on Russian Soyuz vehicles, which have been ferrying astronauts to space ever since the Space Shuttle program ended in 2011.

"Why does Soyuz still fly?" Musk asked rhetorically on stage Monday. "It was designed in the 50s... It's a solid vehicle, it's just, like, it's time to move on."

If the remaining testing goes well and NASA signs off, we could finally be moving on to a new era of human spaceflight within about eight weeks.


তথ্যসূত্র:www.cnet.com

Wednesday, March 11, 2020

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস: আক্রান্ত তিনজনের দুইজনকেই ছাড়পত্র দেয়া হবে, আইইডিসিআর



বাংলাদেশে যে তিনজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন তাদের মধ্যে দু'জনের শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিভাগ আইইডিসিআর'এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, "যে তিনজন কোভিড-১৯ আক্রান্ত ছিল, তাদের দু'জনকে গতকাল (মঙ্গলবার) পরীক্ষা করে আমরা নেগেটিভ পেয়েছি।"

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী ঐ দু'জনকে ছাড়পত্র দেয়া হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

করোনাভাইরাস ম্যাপ
"পরপর দু'দিন পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসলে বা কারো শরীরে কোভিড-১৯'এর উপস্থিতি না পেলে আমরা তাকে সুস্থ ঘোষণা করতে পারি এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিতে পারি।"

গত রবিবার আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ৩জন রোগী শনাক্ত হয়েছে বাংলাদেশে, যাদের মধ্যে দু'জন সম্প্রতি ইতালি থেকে এসেছেন।

আক্রান্তদের বয়স বিশ থেকে পয়ত্রিশ বছরের মধ্যে বলে জানানো হয়েছিল।

আক্রান্ত ব্যক্তিদের আজ আরেক দফা পরীক্ষা করে তাদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হবে কিনা সেবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা।

আইইডিসিআরের পরিচালক জানান এখন পর্যন্ত সর্বমোট ১৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা করেছেন তারা এবং দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশনে বা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা হয়েছে আট জনকে।

সংবাদ সম্মেলনে কোয়ারেন্টিন করার খুঁটিনাটি বিষয়েও আলোচনা করেন আইইডিসিআরের পরিচালক।

তিনি বলেন, "কোয়ারেন্টিন হিসেবে আমরা মূলত ১৪ দিন বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেই। যেসব দেশে বড় আকারে আউটব্রেক রয়েছে, সেসব দেশ থেকে যারা আসবেন তাদেরকে অন্তত ১৪দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা বলছি।"

তবে যারা অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনীয় কাজে বিদেশ থেকে এসেছেন তাদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কাজ ছাড়া অন্যান্য সময় স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিন করার অনুরোধ করেন তিনি।

"স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিন বা সেল্ফ কোয়ারেন্টিন বলতে বুঝাচ্ছি যে কাজের সময়টা বাদে অন্যান্য সময় যেন তারা জনসমাগম এড়িয়ে চলেন এবং ভাইরাস যেন না ছড়ায় সেই সতর্কতা অবলম্বন করেন। কাজের সময়টুকুতেও তারা যেন বিশেষভাবে সতর্ক থাকেন, সেই অনুরোধ করবো আমরা।"


তথ্যসূত্র: bbc.com

করোনাকে মহামারী ঘোষণা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার



করোনা ভাইরাসকে মহামারী ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটি এই মহামারীকে প্যানডেমিক হিসেবে বর্ণনা করেছে। যে রোগ একই সময়ে বিভিন্ন দেশে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে তাকে প্যানডেমিক বলা হয়। বুধবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘোষণা আসে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চিফ ড. টেড্রোস আধানোম গেব্রেসাস বলেন, চীনের বাইরে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা গত দুসপ্তাহে অনেক ১৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, সংক্রমণের এই আশঙ্কাজনক অবস্থা নিয়ে তিনি সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন।
তিনি আরো বলেন, যদিও এখনো খুব বেশে দেরি হয়ে যায়নি। পৃথিবীজুড়ে দেশগুলোর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ পরিষ্থিতি বদলে দিতে পারে।
এদিকে, করোনা ভাইরাসে বুধবার সকাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী মারা গেছেন ৪ হাজার ২৫৮ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৬০০ জন। অপরদিকে করোনায় আক্রান্ত ৬৬ হাজার ৬১৭ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন।
বিশ্বের ১১১টি দেশ ও অঞ্চলে এ ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়েছে। শুধু চীনেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৫৪। এখানে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১৩৬ জনের।
চীনের পর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ইতালিতে। দেশটিতে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ১৪৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬৩১ জনের। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সরকার।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় এক হাজার মানুষ।
অপরদিকে ইরানে এখন পর্যন্ত ৮ হাজার ৪২ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ২৯১ জন।
প্রতিবেশী দেশ ভারতে নতুন করে আরও ১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৬২ জন হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশে নতুন করে কারও শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এছাড়া আগের যে তিনজন এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলেন মঙ্গলবার (১০ মার্চ) তাদের পুনঃপরীক্ষা করে ফল নেগেটিভ পাওয়া গেছে। তারা এখন সুস্থ। শিগগিরই তাদের ছাড়পত্র দেয়া হবে বলে জানান তিনি।


তথ্যসূত্র: somoinews.tv

Tuesday, March 10, 2020

করোনা কেড়ে নিল ব্রিটিশ-বাংলাদেশির প্রাণ


ব্রিটেনে রবিবার যে তৃতীয় ব্যক্তি করোনাভাইরাসে মারা গেছেন, তিনি একজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি। সংক্রমণ ধরা পড়ার মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় ম্যানচেস্টারের এক হাসপাতালে তিনি মারা যান। তার ছেলে বিবিসি বাংলার মোয়াজ্জেম হোসেনের কাছে বর্ণনা করেছেন কীভাবে ইতালিতে বেড়াতে গিয়ে তার বাবা করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন:

‘প্রতি বছরের শুরুতে আমার বাবা ইতালিতে বেড়াতে যান দুই-তিন সপ্তাহের জন্য। এটা তার একটা প্রিয় বেড়ানোর জায়গা। কারণ বহু বছর তিনি ইতালিতে ছিলেন। ১৯৮৯ সালে তিনি বাংলাদেশ থেকে ইতালি আসেন। তখন তিনি বয়সে তরুণ।

উত্তর ইতালির যে শহরে আমরা থাকতাম সেটা মিলান থেকে ৫০ মাইল দূরে। সেখান থেকে সুইটজারল্যান্ডের সীমান্তও বেশি দূরে নয়। বহু বছর আমরা সেখানে ছিলাম। আমার জন্ম সেখানেই। বড় হয়েছি সেখানে।

পাঁচ-ছয় বছর আগে আমরা পাকাপাকিভাবে ব্রিটেনে চলে আসি। আমরা থাকি ম্যানচেস্টারের কাছে। কিন্তু আমার বাবা ইতালিতে বেড়াতে যেতে পছন্দ করতেন। আমরাও প্রতি বছর গ্রীষ্মে পরিবারের সবাই মিলে সেখানে বেড়াতে যেতাম। তবে বাবা প্রতি বছরের শুরুতে নিয়ম করে বেড়াতে যেতেন ইতালিতে তার পুরোনো শহরে। এবছরও গিয়েছিলেন।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তিনি সেখানে যান। তখনও ইতালিতে করোনাভাইরাস এত ব্যাপকভাবে ছড়ানোর কথা শোনা যায়নি। কিন্তু তিনি যে দুই সপ্তাহ ইতালিতে ছিলেন, তার মধ্যেই পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হয়। ব্যাপকভাবে সেখানে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।

ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখ বাবা ফিরে এলেন ইতালি থেকে। তখনও তিনি সুস্থ। কিন্তু তিন দিন পর সব যেন ওলট-পালট হয়ে গেল।

মার্চের তিন তারিখ, মঙ্গলবার। সেই মঙ্গলবারটা ছিল আর যেকোনো দিনের মতোই। আমাদের বাড়ির কাছে যে হেলথ সেন্টার, বাবা সেখানে গিয়েছিলেন ডাক্তার দেখাতে। এই অ্যাপয়েন্টমেন্টটা আগে থেকেই ঠিক করা ছিল।

বাবার বয়স ছিল ৬০ বছর। তার নানা ধরনের অসুস্থতা ছিল, যা নিয়ে তিনি বেশ ভুগছিলেন। কোলেস্টরেল, আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট। তবে এসবের পরও তিনি মোটামুটি ভালোই ছিলেন। তিনি একশোভাগ সুস্থ ছিলেন, এটা বলা যাবে না, কিন্তু মোটামুটি ভালো ছিলেন।

করোনাভাইরাস নিয়ে যেহেতু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল, তাই আমি কিছু মাস্ক কিনেছিলাম। আমি আমার মা-বাবাকে বললাম, বাইরে যাওয়ার সময় যেন তারা মাস্ক পরে বের হন।

গত মঙ্গলবার বাড়ির কাছের হেলথ সেন্টারে যখন বাবা গেলেন, তখন ডাক্তার এবং নার্সরা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, কেন তিনি মাস্ক পরে আছেন। তিনি বললেন, মাত্র দুদিন আগে তিনি ইতালি থেকে এসেছেন।

সাথে সাথে সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লো। তাকে আলাদা করে ফেলা হলো। নর্থ ম্যানচেস্টার জেনারেল হাসপাতাল থেকে একটা জরুরি দল চলে এলো। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো।

তার সঙ্গে আমাদের সেদিনই শেষ দেখা। আমরা বুঝতে পারিনি যে আর কোনোদিন তার সঙ্গে আর দেখা হবে না।

হাসপাতালে প্রথম কয়েকদিন তিনি বেশ ভালোই ছিলেন। কিন্তু তারপর ডাক্তাররা বলছিলেন, তার রক্তে যথেষ্ট অক্সিজেন যাচ্ছে না। তার হার্টবিট অনিয়মিত। এভাবেই চলছিল কয়েকদিন। তারপর রবিবার তিনি মারা গেলেন।

এদিকে বাড়িতে আমাদেরও রীতিমত আলাদা করে রাখা হয়েছিল। আমরা ঘর থেকে বেরুতে পারছিলাম না। কোথাও যেতে পারছিলাম না। বাবার খবরাখবর আমরা পেতাম টেলিফোনে।

যে ওয়ার্ডে তাকে রাখা হয়েছিল, সেখানে আমরা ফোন করতাম। সেখান থেকেই আমরা খবর পেতাম। আমরা তার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারতাম না।

রবিবার সকালে হাসপাতাল থেকে ফোন এলো আমাদের কাছে। তারা বললো, আধ ঘণ্টা আগে বাবা মারা গেছেন। আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। খবরটা শুনে ধাতস্থ হতে আমার কয়েক ঘণ্টা সময় লেগেছিল। আমার বাবাকে আমি আর কোনোদিন দেখতে পাবো না!

এরকম একটা খবর যখন আপনি পান, সেটা বুঝতেই আপনার অনেক সময় লেগে যায়। আমি ছিলাম শোকাহত। আমাদের বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে গেল।

বাবার মৃত্যুর খবর পেলেও আমরা কিছুই করতে পারছি না, কোথাও যেতে পারছি না। কারণ আমাদের সবাইকে 'আইসোলেশনে' রাখা হয়েছে। প্রতিদিন পাবলিক হেলথ ইংল্যাণ্ড থেকে আমাদের সবার কাছে টেক্সট আসে। তারা জানতে চায়, আমাদের সব ঠিক আছে কি না। আমাদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনো লক্ষণ আছে কি না। প্রতিদিন আমাদের সেই টেক্সটের জবাব দিতে হয়। এখন পর্যন্ত আমরা সবাই ভালো আছি। আমাদের কারো মধ্যে করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ নেই।

আমরা এক সপ্তাহ এই অবস্থায় আছি। আরও এক সপ্তাহ থাকতে হবে।

আমরা যেহেতু আইসোলেশনে আছি, তাই আমার বাবার জানাজা বা দাফন কোনো কিছুই করতে পারছি না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা লাশ আরও কিছুদিন মর্গে রেখে দেবে । আরও এক সপ্তাহ পর যখন আমাদের মুক্তি মিলবে, তখন আমরা বাবার জানাজা, দাফন এগুলোর আয়োজন করতে পারবো।

আমরা এখনো জানি না, তার জানাজা-দাফন এগুলো আমরা স্বাভাবিকভাবে করতে পারবো কি না। কারণ তিনি তো স্বাভাবিকভাবে মারা যাননি। পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড যা বলে, সেই মতই আমাদের কাজ করতে হবে।

মাত্র দুই মাস আগেও আমরা জানতাম না করোনাভাইরাস জিনিসটা কী, এই ভাইরাসটাই ছিল না। এখন এই ভাইরাস আমার বাবাকে কেড়ে নিল।

-বিবিসি বাংলা

করোনার স্থায়ী প্রতিষেধক আবিষ্কারের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের


বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিরাময়ে এখনও কার্যকর কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। বিজ্ঞানীরা প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি আমেরিকান বিজ্ঞানীদের একটি দল গবেষণাগারে নতুন একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে। যেটা করোনাভাইরাসের স্থায়ী সমাধান হতে পারে।

তাইওয়ান নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের পথে এটি একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। এ গবেষণা থেকে পাওয়া ফল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণাগারে পাঠানো হবে।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন আবিষ্কারে এটা এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে অভিহিত করা হয়েছে।

করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণার সময় তারা হঠাৎ লক্ষ করে দেখেন যে ল্যাবের পরীক্ষণ থালাটিতে কোভিড-১৯ ভাইরাসের ওপরে এই টিকা কাজ করছে। টিকার সংস্পর্শে ভাইরাসটি অস্থির আচরণ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটস-এ সপ্তাহব্যাপী ঘন্টার পর ঘন্টা এটা নিয়ে গবেষণা করার পরে, ইঁদুরের ওপর মূল পরীক্ষাটি চালানো হয়। পরীক্ষায় দেখা গেছে এই ভ্যাকসিন ইঁদুরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।

ভ্যাকসিনটির উন্নয়নের নেতৃত্ব দেওয়া এনআইএইচ এর গবেষণা সহযোগী কিজমেকিয়া কর্বেট বলেছেন, যখন তার দল ইতিবাচক ফলাফলের কথা পাঠিয়েছিল, তখন এটি সবার জন্য একেবারে আশ্চর্যজনক ছিল। সবাই উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল।

কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য বিশ্বজুড়ে ১২টিরও বেশি বিজ্ঞানী দল কাজ করে চলেছে। এই জন্য তারা গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ধরণের ভ্যাকসিনগুলি তৈরির প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে। দ্রুততম সময়ে তারা কিছু একটা আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। তারা যে সব ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে নতুন আবিষ্কার হওয়া এই ভ্যাকসিন তারচেয়ে অধিক কার্যকরি হতে পারে বলে আশাবাদি বিজ্ঞানীরা। কিছু কিছু বিজ্ঞানীরা শর্ট কিছু আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন যেটা এক বা দুই মাসের জন্য হলেও মানুষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিতে পারে। তবে নতুন এই ভ্যাকসিনটি করোনার স্থায়ী সমাধান হতে পারে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।

তবে পেন প্রেসবিটারিয়ান মেডিকেল সেন্টারের সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান ডঃ জুডিথ ওডনেল সাবধান করে বলেছিলেন, যতক্ষণ না আমরা এগুলি মানুষের মধ্যে পরীক্ষা করতে পারছি, ততক্ষণ আমাদের এই ভ্যাকসিনের কার্যক্ষমতা কী হবে সে সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পাওয়া সম্ভব নয়।

প্রথমে অল্প সংখ্যক যুবক, সুস্বাস্থের অধিকারী স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে শীঘ্রই পরীক্ষা করা শুরু হবে। তবে এই পরীক্ষায় যারা অংশগ্রহণ করবেন তাদের শরীরে ভাইরাসটির প্রবেশের কোন সম্ভাবনা নেই, কারণ এই ভ্যাকসিনের মধ্যে ভাইরাসটি নেই। নিখুঁতভাবে পরীক্ষা করা উচিত যে, মানবদেহে ভ্যাকসিনগুলি কোনও উদ্বেগজনক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখায় কি-না। মানবদেহে ব্যবহারের জন্য এই ভ্যাকসিনগুলি সুরক্ষিত কি-না সেটা বৃহত্তর পরীক্ষায় নির্ধারিত হবে।

প্রথমে এটা সিয়াটেলে ওয়াশিংটন স্বাস্থ্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৪৫ জন স্বেচ্ছাসেবকের ওপর পরীক্ষা করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এরপরে, ইনোভিও ফার্মাসিউটিক্যালস আগামী মাসে পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক ডজন স্বেচ্ছাসেবক এবং মিসৌরির কানসাস সিটিতে একটি পরীক্ষামূলক কেন্দ্রে ভ্যাকসিন প্রার্থীদের ওপর প্রয়োগ করা হবে। তারপরে চীন এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় একই রকম গবেষণা চালানো হবে।

প্রাথমিক সুরক্ষা পরীক্ষা ভাল ফলাফল পাওয়া গেলে, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে এটা বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। যে কোন নতুন ভ্যাকসিন ব্যাপকভাবে ব্যবহারের এই সময় লাগে বলে বলছিলেন এনআইএইচর জাতীয় অ্যালার্জি এবং সংক্রামক রোগের বিভাগের পরিচালক ডাঃ অ্যান্টনি ফাওসি।

এটি এখনও পরিক্ষামূলক পর্যায়ে আছে। প্রস্তুতকারকরা জানেন এটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কারণ ভ্যাকসিনটি সত্যিই মানবদেহের জন্য সুরক্ষিত কি-না এবং কোন ক্ষতি করে না এটা নিশ্চিত হতে হাজার হাজার মানুষের উপর পরীক্ষা চালানোর প্রয়োজন হয়।

ইনোভিওর গবেষণা ও উন্নয়ন প্রধান কেট ব্রোডারিক বলেছেন, আমি সত্যিই প্রত্যেকের হতাশা এবং বিভ্রান্তি বুঝতে পারি। কিন্তু আপনি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সবকিছু তাড়াহুড়ো করে করতে পারেন না। গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এটা সঠিক হয়েছে বলা যাবে না।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে প্রথমবারের মতো ধরা পড়া করোনাভাইরাস। এ পর্যন্ত অন্তত ১০৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে। এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ২ হাজার ২৩৭ জন, মারা গেছেন ৩ হাজার ৪৯৭ জন।

অতিরিক্ত দামে মাস্ক বিক্রি, নোয়াখালীতে দুই ফার্মেসীর অর্থদণ্ড



নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বাজারে অতিরিক্ত দামে মাস্ক বিক্রি করায় দুই সার্জিক্যাল ফার্মেসীকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

মঙ্গলবার (১০ মার্চ) দুপুরে এ অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. রোকনুজ্জামান খান।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, চৌমুহনী সমবায় মার্কেটের ইসলামিয়া সার্জিক্যালের সত্ত্বাধিকারী তিন ক্যাটাগরির ফেস মাস্ক বিক্রয় করে আসছিলেন, চায়না মাস্ক ১২০ টাকা যার পূর্বের মূল্য ৪০ টাকা, এয়ার ফিল্টারিং মাস্ক ১৩০ টাকা যার পূর্বের মূল্য ৪০ টাকা এবং কাপড়ের নরমাল মাস্ক ৬০ টাকা করে বিক্রয় করছিল যার পূর্বের মূল্য ১০ টাকা ছিলো। পরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ ও ড্রাগ আইন ১৯৪০ এর বিধান অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিকে ৭০ হাজার টাকা এবং একই অভিযোগে ফেয়ার সার্জিক্যাল ফার্মেসিকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
এ সময় আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন সহকারি পরিচালক মাসুদুজ্জামান খান, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর নোয়াখালী ও সহকারি পরিচালক কাওছার আহমেদ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নোয়াখালী এবং বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।


তথ্যসূত্র: somoinews.tv

চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগীদের স্থান হবে বিআইটিআইডিতে



বিদেশফেরত যাত্রীদের বিমানবন্দরে স্ক্রিনিংয়ের পাশাপাশি কোয়ারেন্টাইনে থাকারও ব্যবস্থা করছে সরকার।

এছাড়া, চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলে প্রথমে সীতাকুণ্ডে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রফিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ওই হাসপাতালে ইতোমধ্যে চালু করা হয়েছে ১০ শয্যার ইউনিট।
বিমানবন্দর বা সমুদ্রবন্দর দিয়ে আসা কারো এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলে তাদের এই হাসপাতালে পাঠানো হবে জানিয়ে হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ২৪ জানুয়ারি থেকে হাসপাতালের ডায়রিয়া ইউনিটের দুটি কক্ষে আইসোলেটেড ইউনিট খোলা হয়েছে। এই সংক্রামক ভাইরাস প্রতিরোধে রোগীর জন্য বিশেষ পোশাকও সরকার সরবরাহ করেছে।

জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগরে কোয়ারেন্টাইনের জন্য হালিশহরের পিএইচ আমীন একাডেমি ও কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকার সিডিএ পাবলিক স্কুলকে প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি সব হাসপাতালেও আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৩০টি কক্ষ প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালে আলাদা কক্ষ তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

উল্লেখ্য, গতকাল রোববার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা জানান, দেশে আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের মধ্যে দুজন ইতালিফেরত।

সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে করোনা নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

করোনাভাইরাস: ইতালিজুড়ে মানুষকে ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ



করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশ জুড় জরুরী কর্মকাণ্ড বাড়িয়েছে ইতালি। এর মধ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং জনসমাগমে না যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।


সোমবার প্রধানমন্ত্রী জুজেপ্পে কন্টে মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন এবং জরুরী ভ্রমণের ক্ষেত্রেও অনুমোদন নেয়ার কথা বলা হয়েছে।



তিনি বলেন যে, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে থাকা মানুষদের সুরক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, "হাতে আর সময় নেই।"

সোমবার ইতালিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৬৬ থেকে ৪৬৩ জনে দাঁড়িয়েছে। চীনের পর এটি সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশ।


সরকারি হিসাব বলছে, রবিবার থেকে নিশ্চিতভাবে আক্রান্তের সংখ্যাও ২৪% বেড়েছে। ইতালির ২০টি এলাকার সবকটিতে ভাইরাস আক্রান্তের খবর মিলেছে।

ঘরে থাকুন:
প্রধনমন্ত্রী জুজেপ্পে কন্টে বলেন, সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে মানুষকে ঘরে থাকতে হবে। "আমাদের এখানে সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়ছে...আর সেই সাথে মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে," সন্ধ্যায় দেয়া এক ভাষণে তিনি একথা বলেন।

"পুরো ইতালি একটি সংরক্ষিত এলাকায় পরিণত হবে," তিনি বলেন।

"ইতালির স্বার্থে আমাদের সবাইকেই কিছু না কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আর এটা এখনই করতে হবে।"

"এজন্যই সংক্রমণ ঠেকাতে এবং নাগরিকদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা দিতে আমি আরো বেশি দৃঢ় ও কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"

লা রিপাবলিকা সংবাদপত্রকে দেয়া এর আগে এক সাক্ষাৎকারে প্রাদুর্ভাব নিয়ে তিনি বলেন: "এই মুহূর্তে আমার চার্চিলের সেই পুরনো কথা মনে পড়ছে...এটা আমাদের সবচেয়ে অন্ধকারতম সময়, কিন্তু আমরা এটি অতিক্রম করবো।"

নিষেধাজ্ঞাগুলো কী কী?
মিস্টার কন্টে এক কথায় নিষেধাজ্ঞা বোঝাতে বলেছেন, "বাড়িতে থাকুন"- সেই সাথে জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

"রাতের জীবন আর থাকবে না; আমরা এগুলোর অনুমতি দিতে পারি না কারণ এগুলো সংক্রমণের উপলক্ষ তৈরি করে," তিনি বলেন।

ফুটবল ম্যাচসহ সব ধরণের খেলাধুলার অনুষ্ঠান সারা দেশে বাতিল করা হয়েছে। স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ৩রা এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

সরকার বলছে, শুধুমাত্র যাদের এমন কোন দাপ্তরিক কাজ রয়েছে যা বাতিল করা সম্ভব নয় কিংবা এমন কোন পারিবারিক জরুরি অবস্থা তৈরি হয়েছে যা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয় শুধু তারাই ভ্রমণ করতে পারবে।

বিমান যেসব যাত্রী আসা-যাওয়া করবেন তাদের সবাইকেই প্রমাণ করতে হবে যে তারা অসুস্থ নন।

ট্রেন স্টেশনে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে। বিভিন্ন বন্দরে প্রমোদ জাহাজ নোঙর করার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।


সাধারণ মানুষ একে কীভাবে দেখছে?
সোমবার ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর অংশ হিসেবে কারাবন্দীদের সাথে সব ধরণের সাক্ষাৎ বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণার পর জেলের ভেতরে দাঙ্গায় সাত জন বন্দী নিহত হয়।

দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় সান্তা'আন্না কারাগারে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়।

ধারণা করা হচ্ছে যে, কারাবন্দীরা জেলের একটি হাসপাতালে হেরোইনের বিকল্প হিসেবে মেথাডোনের খোঁজে হামলা চালালে ওই মাদকের মাত্রাতিরিক্ত সেবনের কারণে দুই জন প্রাণ হারায়।
কর্তৃপক্ষ জানায়, মিলানের সান ভিত্তোর কারাগারে বন্দীরা একটি সেল ব্লকে আগুন দিয়ে জানালা দিয়ে ছাদে উঠে ব্যানার নাড়াতে থাকে।

দক্ষিণাঞ্চলের ফোজিয়া শহরের একটি কারাগারে বিক্ষোভের সময় কয়েক ডজন বন্দী জেল ভেঙ্গে বাইরে বেরিয়ে আসে। অনেকেই তাৎক্ষনিকভাবে গ্রেফতার করা হয়। তবে নয় জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

ইতালির নেপলস, রোম ও উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি কারাগারে এখনো দাঙ্গা চলছে।

বিশ্বের অন্যান্য স্থানে কী হচ্ছে?
পুরো বিশ্বে এখন আক্রান্তের সংখ্যা ১১১০০০ জন এবং মৃতের সংখ্যা ৩৮৯০ জন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, দেশটিতে এখন যারাই পৌঁছাবে তাদের সবাইকে স্বেচ্ছায় ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে এই রোগে আরো ৪৩ জন মারা যাওয়ার কথা জানানো হয়। মধ্য ফেব্রুয়ারির পর থেকে দেশটিতে ৭১৬১ জন আক্রান্ত এবং ২৩৭ জন মারা গেছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে আরো বেশি বলে ধারণা করা হয়।

চীনে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা থাকলেও দেশটিতে একদিনে নতুন করে ৪০ জন আক্রান্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছে যা গত ২০শে জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন।

যদিও দেখা যাচ্ছে যে দেশটিতে সংক্রমণের হার কমে আসছে, তবু শঙ্কা থাকছে যে, হয়তো সব ঘটনা নজরে আসছে না।

অন্যান্য স্থানের কী অবস্থা?
•বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছে যে, বিশ্বব্যাপী মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়ার "সম্ভাবনা খুবই বাস্তব।"

•ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে কানাডা- ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ভাঙ্কুভারে এক প্রবীণ নিবাসে একজন আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

•ফ্রান্সে সংস্কৃতি মন্ত্রী ফ্র্যাংক রিস্টার সরকারের প্রথম সদস্য যিনি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তার দলের সদস্যরা বলেছে যে, গত সপ্তাহের বেশ কয়েক দিন তিনি পার্লামেন্টে কাটিয়েছেন। যেখানে আরো অনেকে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা গেছে।

•যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে

•হাজার হাজার আরোহী নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে করোনাভাইরাসের কারণে সাগরে আটকে পড়া একটি প্রমোদ জাহাজ সান ফ্রান্সিসকোর কাছে অকল্যান্ড বন্দরে নোঙর করেছে

•প্রাদুর্ভাবের অর্থনৈতিক ক্ষতি ও অর্থনৈতিক সংকটের আশঙ্কার মুখে সারা বিশ্বের শেয়ার বাজারে ধস অব্যাহত রয়েছে।

Monday, March 9, 2020

করোনা আক্রান্ত ৬০ হাজার মানুষ এখন সুস্থ


বিশ্বের প্রায় ৯১টি দেশে কামড় বসিয়েছে প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা। এক লাখেরও বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত। মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৬৪৮ জন। এমন পরিস্থিতিতেও বিশ্ববাসীর জন্য সুখবর। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দোড়গোড়া থেকে ফিরে এসেছে, এমন নিদর্শনও রয়েছে। গোটা বিশ্বে ৬০ হাজার ৬৩৭ জন মানুষ সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বিভাগ বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে নিয়মিত তথ্য সংরক্ষণ করছে। এ নিয়ে কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠান দ্য সেন্টার ফর সিস্টেম সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসএসই)।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া কভিড-১৯ করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৩ হাজার ৬৪৮ জন। যাদের মধ্যে ৫৪৫ জন ছাড়া বাকি সবাই চীনের নাগরিক।
পুরো বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ সাত হাজার ৪৮৫ জন মানুষ। আক্রান্তদের অধিকাংশই চীনের হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। ডিসেম্বরের শেষে অঞ্চলটির রাজধানী উহান থেকে ভাইরাসটির উৎপত্তি।
তবে আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৬০ হাজার ৬৩৭ জন মানুষ। ফলে যেভাবে দ্রুত করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে দেশে দেশে, এতে সুস্থ হয়ে ওঠার হারও বেশ আশাব্যাঞ্জক।
চীনের মূল ভূখণ্ডে সেরে উঠেছেন ৫০ হাজারের অধিক ব্যক্তি। ইরানে ২১৩৪, ইতালিতে ৫৮৯, দক্ষিণ কোরিয়ায় ১১৮, সিঙ্গাপুরে ৭৮, জাপানে ৭৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
এ ছাড়া স্পেন, জার্মানি, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়াসহ আক্রান্ত সব দেশেই পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন রোগীরা।
বয়স্ক এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যায় ভোগা মানুষকে বেশি আক্রান্ত করছে করোনাভাইরাস। তবে উহানের ১০০ বছর বয়সী আক্রান্ত এক ব্যক্তি সেরে ওঠেছেন এই রোগ থেকে। শনিবার (০৭ মার্চ) তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়াও হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, আক্রান্ত ব্যক্তি আলঝেইমার রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখ হুবেইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
এদিকে চীনের পর ভাইরাসটির সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ঘটেছে ইতালি, ইরান ও কোরিয়ায়। ইতালিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৩৩ জন। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৬ হাজার মানুষ। ইরানে মারা গেছে ১৯৪ জন মানুষ। সংক্রমণ ঘটেছে সাড়ে ৬ হাজার মানুষের দেহে। দক্ষিণ কোরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৫০। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে সাত হাজারের অধিক মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ জনে। ক্যালিফোর্নিয়া ও নিউইয়র্কে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা।
রোববার (০৮ মার্চ) বাংলাদেশে প্রথম তিন জনকে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের দু’জন ইতালি ফেরত। আক্রান্ত দু’জনের মদ্যে দু’জন স্বামী-স্ত্রী। এবং তারা নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।


তথ্যসূত্র:somoinews.tv

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে কোরআনের আয়াত!



হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে – যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের গ্রন্থাগারের প্রবেশপথে ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআনের ন্যায়বিচার সম্পর্কে একটি আয়াত তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে ন্যায়বিচারের উদাহরণ হিসেবে ইস্পাতের সাইনবোর্ডে খোদাই করে লিপিবদ্ধ হয়েছে সূরা নিসার ১৩৫ নম্বর আয়াত।

এর মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে, আয়াতটি ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ইতিবাচক একটি দৃষ্টান্ত। ন্যায়বিচারের ব্যাপারে কোরআনের এই বাণীকে উৎকৃষ্ট উদাহরণ মনে করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ফটকের খোদাই করা সূরা নিসার ১৩৫ নম্বর আয়াতটি হলো- ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা ন্যায়বিচারে অটল থাকো। তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সাক্ষ্য দেবে। সত্য বলার কারণে যদি তোমার নিজের ক্ষতি হয় অথবা মা-বাবা বা আত্বীয়ের ক্ষতি হয়, তবুও সত্য সাক্ষ্য দেবে।

বিচারপ্রার্থী দুইপক্ষ ধনী কিংবা গরীব যাই হোক না কেনো তোমরা সত্যের পক্ষেই সাক্ষ্য দেবে। তোমাদের চেয়ে আল্লাহ তায়ালা তাদের বেশি কল্যাণ চান। লোভের বশবর্তী হয়ে কিংবা প্রবৃত্তির তাড়নায় ন্যায়বিচার থেকে দূরে সরে যেও না। যদি প্যাঁচানো কথা বলো কিংবা সত্যকে ঘুরিয়ে বলো এ জন্য যে- তোমার পক্ষ জিতে যাবে, তাহলে মনে রেখো আল্লাহ তায়ালা ভেতর-বাইরের সব গোপন খবর স্পষ্টভাবে জানেন।’

Sunday, March 8, 2020

Former PUBG Esport Team Owners Detail Broken Promises & Cancellations



Apparently, dealing with the PlayerUnknown's BATTLEGROUNDS Esports department was a pretty unpleasant experience, according to two former PUBG Esport team owners. One of the earliest games to popularize the now widespread battle royale shooter genre, PUBG has kept the majority of their players invested by continuing to add in new weapons, locations, and features, such as the ability to fly lightweight airplanes in PUBG.

Although it began as a PC-only title, PUBG can now be found on the Xbox One, PlayStation 4, and even mobile devices. PUBG Mobile recently celebrated its second anniversary, and is featuring a special event this month which will add an amusement park to Erangel, the game's first map ever released. Players have also been enjoying the game's new 8v8 Deathmatch mode, which takes players to one of seven different select locations from the PUBG maps and lets them battle it out old-school style. The game has grown in popularity in the Esports scene since release, although some of PUBG's recent Esports news hasn't been very flattering.

Now, thanks to a recent interview by Esports Insider, players have a little bit of a better idea of what goes on behind the scenes at PUBG Esports, and from delaying promised items to leaving team owners to find out league changes via Twitter, it doesn't sound very good. According to Shawn Pellerin, Co-owner of Spacestation Gaming, communication between his team and the National PUBG League was "non-existent," and that "Alex Penn, who was in charge of NPL, never replied to emails - even after multiple attempts... we were never able to give feedback on anything." Feedback would have been helpful, especially since both Pellerin and the CEO of Ghost Gaming, Matt Dillon, reported that they were promised custom in-game items for their teams, but those never came. "I expected our share of that to be at least $50,000," Dillon said.

Dillon also stated that his team was "promised, or at least pitched, a much more robust offering of in-game items custom for each time. The original time frame for that should have been Phase 1." However, the National PUBG League ended up moving these cosmetic items further and further back, first to Phase 2, and then to the PUBG Global Championship. According to Pellerin, a similar story was told to them, where "We were promised they would build a full organization set including weapon... but never ended up happening." The items were eventually cancelled, and both owners described the support they received from the PUBG Corporation as "minimal" throughout the entire process.

Given the rising popularity of Esports over the past few years, companies like the PUBG Corporation will need to reassess the way they handle dealings with Esports teams in the future, lest they allow their game to become abandoned for one which offers a more positive working relationship. While unforeseeable events always occur in business (just look at how the coronavirus cancelled SXSW) the most important thing that everyone involved can do to help each other out is maintain an open and honest line of communication. Hopefully PlayerUnknown's BATTLEGROUNDS will do a better job of taking care of their Esports teams in the future, and until then both Ghost Gaming and Spacestation Gaming can find other games to play.