Hi, I’m Hasibul Islam. The founder of this blog " https://hasibul66.blogspot.com/ " and many other online ventures. I’m a professional full-time blogger, a digital marketer, and a trainer. I’m here to help bloggers like you to create an outstanding blog.
Saturday, March 14, 2020
যে কারণে আমেরিকায় করোনার ঝুঁকি বেশি
আমেরিকাজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১৩ মার্চ হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন তিনি। এর আগে ইউরোপীয় দেশ থেকে আমেরিকায় ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন ট্রাম্প।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সময় করোনা ঠেকাতে ৫০ বিলিয়ন ডলার সাহায্য তহবিল ঘোষণা করেন ট্রাম্প। আমেরিকায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৭০১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৪০ জন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে বা ঝুঁকি সত্ত্বেও অনেক মানুষ চিকিৎসকের কাছে যাবেন না। কারণ আমেরিকায় ১০ মিলিয়নের বেশি মানুষের স্বাস্থ্যবিমা বা এ দেশে থাকার বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। তাই তাঁরা দরকার থাকলেও স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছে না। এ কারণে এই দেশের প্রতিটি মানুষ করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন।
সেবাস্তিয়ান নামের এক ব্যক্তির হাতের ত্বক শুষ্ক হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ফেটেও গেছে। হাত অতিরিক্ত ধোয়ার কারণেই এমন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় হাত ধুয়ে নিই। এটা এখন অভ্যাস। কারণ ছোটবেলা থেকে জানি, যদি আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি, তাহলে কোনো চিকিৎসকের কাছে যেতে পারব না।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, সেবাস্তিয়ান মাত্র তিন বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে মেক্সিকো থেকে আমেরিকায় আসেন। আমেরিকায় বৈধ কাগজপত্রবিহীন প্রায় ১১ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে এই সেবাস্তিয়ান একজন। আমেরিকার নাগরিকত্ব নেই মানেই দেশটিতে স্বাস্থ্যসেবার কোনো সুযোগ নেই।
সেবাস্তিয়ান বলেন, ‘আমি চিকিৎসকের কাছে যাই না। যদি কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ি, তাহলে মা ঘরেই নানা টোটকা দিয়ে তা সারিয়ে তোলার চেষ্টা করতেন। বেশি অসুস্থ হলেই স্কুল ফাঁকি দিতে হতো।’
সম্প্রতি সেবাস্তিয়ানের এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে সেবাস্তিয়ান বলেন, সব খবরই তাঁর পরিবারের সদস্যরা দেখছে। কিন্তু বাস্তবে তাঁদের কিছুই করার নেই। তিনি বলেন, ‘বৈধ কাগজপত্রবিহীন হওয়ায় মেডিকেলে যাওয়াটা অনেক কঠিন এখানে। তারপরও যদি যেতে হয়, তাহলে দেশ থেকে বহিষ্কার করে দেওয়ার ঝুঁকি থাকে। আমার পরিবার অপরাধী নয়, তবে এটা ঠিক আমাদের বৈধ কাগজপত্র নেই। এ কারণেই আমাদের চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটা অনেক ভয়ের ব্যাপার।’
আমেরিকায় বৈধ কাগজপত্র থাকুক আর না থাকুক, যে কারও জন্যই দেশটিতে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটা অনেক ব্যয়বহুল ব্যাপার। আমেরিকায় প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ মানুষের কোনো স্বাস্থ্যবিমা নেই। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ সময় নানা কারণে সংখ্যাটা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। আর স্বাস্থ্যবিমা ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে তাদের খরচ হয় কয়েক শ ডলার।
২৮ বছর বয়সী লিসা রুবিও চাকরি করার কারণে স্বাস্থ্যবিমা সুবিধা পান। তিনি বলেন, ‘ফ্লুর সময়ে আমরা অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ি। এ ক্ষেত্রে আমার শিশু সন্তানকে চেক করার জন্য প্রতিবার চিকিৎসককে ১০০ ডলার করে দিতে হয়। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগে কাশির কারণে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু চিকিৎসক বলেছেন, এটা ভাইরাসের কারণে। তাই কোনো ওষুধ প্রেসক্রাইব করা যাচ্ছে না। চিকিৎসক প্রেসক্রাইব না করলেও কিন্তু বিমা থেকে তাঁর বিল কেটে নেওয়া হবে।
গত বছর পর্যন্ত লিসার কোনো স্বাস্থ্যবিমা ছিল না। গত বছরই লিসা এ কারণে মহাবিপদে পড়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। বুকে খুব ব্যথা হয়েছিল। কিন্তু আমার বিমা সুবিধা ছিল না। তাই অর্থ খরচের ভয়ে এই ব্যথা বারবার এড়িয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু এর দুই সপ্তাহ পর একদিন মধ্যরাতে আমার ফুসফুস কাজ করা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিল। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে আমাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। সে সময় চিকিৎসক বলেছিলেন, ব্যথা নিয়ে যদি আগেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতাম তাহলে এমনটা হতো না।’
আমেরিকায় জনস্বাস্থ্য কর্মীদের যেকোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। করোনার এই সংকটের কারণে তা আরও বহুগুণ বেড়ে যাবে। এ ছাড়া আমেরিকায় এ ধরনের কোনো কর্মীকে বেতনসহ অসুস্থতাজনিত ছুটি দেওয়ার বিধান নেই।
দাতব্য সহায়তায় পরিচালিত একটি মোবাইল ক্লিনিকের পরিচালক ও চিকিৎসক রবি গ্রাভোস শাহ বলেন, ‘আমি রোগীদের নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। কারণ তাঁরা অসুস্থ অবস্থায় এসে সামান্য চিকিৎসা নিয়েই আবার কর্মক্ষেত্রে ফিরে যান। কারণ এ ছাড়া তাঁদের আর কোনো উপায় নেই। তাঁদের খাবারসহ যাবতীয় খরচের অর্থ জোগানেরও ওই কাজ ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। করোনাভাইরাসের এই সময়েও এই পরিস্থিতির হয়তো কোনো পরিবর্তন হবে না।’
টাকসন এলাকায় দাতব্য সহায়তায় পরিচালিত এই মোবাইল ক্লিনিকে সপ্তাহে প্রায় ৫০ জন রোগীর চিকিৎসা করানো হয়। যারা অন্য মেডিকেলে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য রাখেন না, তাঁরাই এই ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন।
রবি গ্রাভোস শাহ আরও বলেন, করোনাভাইরাস আসার আগে অসংখ্য রোগী এইচআইভি ও অন্যান্য যৌন রোগের লক্ষণ থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা করাননি। স্বাস্থ্যবিমা সুবিধা নেই বলেই তাঁরা এই জটিল রোগ নিয়েও তা এড়িয়ে গেছে। ফলে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আমেরিকায় জনস্বাস্থ্য সংকটের এটা একটা বড় উদাহরণ হতে পারে। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের মতো ভয়াবহ এই ভাইরাস আসার পরও এই পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই করোনাভাইরাসের সময়ও কোটি মানুষ স্বাস্থ্যবিমা নেই বলে চিকিৎসা না নেয়, তাহলে এর পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে। হয়তো আমেরিকার প্রতিটি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবেন।
তথ্যসূত্র:prothomalo.com
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment