Saturday, December 12, 2020

উচ্চশিক্ষা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার সময়সূচীর ব্যাপারে সুর নরম করলো


 বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নানা সময়ে পরীক্ষা নেয়ার আবেদন তাদের কাছে আসছে।


ছাব্বিশে ডিসেম্বর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নেয়া হবে, কিন্তু হল খোলা হবে না - একাডেমিক কাউন্সিলের এমন সিদ্ধান্তের দুদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য বিবিসিকে বললেন, শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে, পরিস্থিতি বুঝে দেয়া হবে পরীক্ষার তারিখ। তবে পরীক্ষা হলেও আবাসিক হল না খোলার ব্যাপারেই অনঢ় তিনি।


এই পরীক্ষা যদি অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে এটা হবে করোনাভাইরাস মহামারির পর মূলধারার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রথম সশরিরে পরীক্ষা গ্রহণ।


মহামারির কারণে গত মার্চ থেকে বন্ধ আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷ গত জুন থেকে অনলাইনে ক্লাস চললেও এখন পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হয়নি।


বৃহস্পতিবার একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ২৬ ডিসেম্বর থেকে স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষাগুলো নেওয়া হবে। এই খবর স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।


বিশেষ করে ঢাকার বাইরে থেকে আসা যেসব শিক্ষার্থী আবাসিক হলে থেকে বিশ্বাবিদ্যালয় পড়েন, তাদের বক্তব্য, পরীক্ষা দেয়ার জন্য জন্য ঢাকায় এসে কোথায় থাকবেন তারা? কীভাবে অংশ নেবেন পরীক্ষা?


  • সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটাই ভর্তি পরীক্ষা
  • মুক্ত চিন্তার জায়গা কমে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে?
  • ক্লাসে ফিরতে চান ঢাবি শিক্ষক রুশাদ ফরিদী
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণে অভিযুক্তকে সর্বোচ্চ শাস্তি

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান

যে কারণে পরীক্ষা নিতে চায় বিশ্ববিদ্যালয়:


বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নানা সময়ে পরীক্ষা নেয়ার আবেদন তাদের কাছে আসছে।

কারণ তারা এখন চাকরির বাজারে ঢোকার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।

এছাড়া সেশন জট কমিয়ে আনাটাও একটা কারণ এই পরীক্ষা নেয়ার পিছনে।

এ কারণেই একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরুর তারিখ ঠিক করা হয়েছিলো এ বছরের ছাব্বিশে ডিসেম্বর।

কিন্তু এখন সুর নরম করে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বিবিসিকে বলছেন, "পরীক্ষার কোন ফাইনাল তারিখ দেয়া হয়নি। প্রতিটা বিভাগ তাদের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে, তাদের পরিস্থিতি বুঝে তারপর পরীক্ষার তারিখ ও রুটিন দেয়া হবে"।

ছাব্বিশ ডিসেম্বর তারিখটি ছিল উপাচার্যের চোখে একটি প্রস্তুতিমূলক সময়সূচী।

তবে হল না খোলার ব্যাপারে অনঢ় অবস্থানের কথা জানাচ্ছেন উপাচার্য।

তাহলে পরীক্ষা দিতে এসে কোথায় থাকবেন ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীরা?

উপাচার্যের ভাষায়, যেহেতু শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে আগ্রহী, তাই তারা নিজেদের থাকার একটা ব্যবস্থা নিশ্চয়ই করতে পারবে বলে তার আশা।

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার যে প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক
  • বাংলাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে সব ফি আদায় করা যাবেনা
  • নবম থেকে এসএসসি পর্যন্ত পাঁচজনের একজন ঝরে পড়ছে

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত মার্চ থেকে বন্ধ আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷

পরীক্ষা দিতে চান যারা:


সাদিয়া রহমান সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পর থেকেই তিনি যশোর জেলার নিজ বাড়ীতে অবস্থান করছেন।

তিনি বলছেন, "পরীক্ষা হয়ে গেলে অন্তত বিভিন্ন চাকরির পরিক্ষাগুলোতে অংশ নিতে পারবো। সেটার জন্য যদি পরীক্ষা হয় তাহলে ঢাকায় থাকার একটা ব্যবস্থা করতে হবে"।

যেভাবে নেয়া হতে পারে পরীক্ষা:


মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলছেন, সবার আগে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টা বিবেচনায় রাখতে হবে।

সেই বিবেচনায় পরীক্ষা অনুষ্ঠানের সময় অর্ধেক কমিয়ে আনা হবে বলে জানাচ্ছেন তিনি।

ভাবা হচ্ছে এক দিনে দুটো পরীক্ষা নেবার কথাও।

এছাড়া ইনকোর্স ও টিউটোরিয়াল পরীক্ষা অনলাইনের মাধ্যমে নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

উপাচার্যের ভাষায়, "স্বল্প সময়ের মধ্যে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে"।

তথ্য সূত্রঃ bbc.com

বাংলা একাডেমির ভার্চুয়াল বইমেলার সমালোচনায় প্রকাশক ও লেখকরা

 

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশে ২০২১ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলা স্থগিত করার যে সিদ্ধান্ত বাংলা একাডেমি নিয়েছে সেটির কড়া সমালোচনা করছেন লেখক ও প্রকাশরা।


তারা প্রশ্ন তুলছেন, বাংলাদেশে শপিং-মল, কলকারখানা এবং গণ-পরিবহন সহ সবই যেহেতু স্বাভাবিক নিয়মে চলছে, সেক্ষেত্রে কেন বই মেলা বন্ধ রাখা হবে?

বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা বলছেন, বইমেলা আয়োজনের জন্য তারা আরো আগে থেকেই প্রস্তুত নেয়া শুরু করেছিলেন।

তাদের আশা ছিল করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির হয়তো উন্নতি হবে।

কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বাংলা একাডেমি ভিন্ন চিন্তা করতে বাধ্য হয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম পরিচালক ড. জালাল আহমেদ।

"আমাদের নির্বাহী পরিষদ, বাংলা একাডেমির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী প্রতিষ্ঠান, সেটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় আপাতত বইমেলা স্থগিত থাকবে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমরা আবার বইমেলা শুরু করবো।"

তবে ফেব্রুয়ারি মাসে একটি ভার্চুয়াল বইমেলা আয়োজন করা যেতে পারে বলে মনে করছে বাংলা একাডেমি।

লেখক এবং প্রকাশকরা বলছেন, বইমেলার প্রকৃত আবহ ভার্চুয়াল বইমেলার মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব নয়।

ভার্চুয়াল বইমেলাকে সমর্থন করছেন না লেখক সাদিয়া নাসরিন।

লেখক সাদিয়া নাসরিন বলেন, "বইমেলা শুধু বই কেনা-বেচার জায়গা না। এখানে লেখক এবং পাঠকের মধ্যে যোগাযোগেরও জায়গা। এখানে আড্ডা হয়, গল্প হয়। এতবড় একটি জিনিস অনলাইনে করা সুন্দর বা সুখময় কিছু হবে বলে আমার মনে হয় না।"

প্রকাশকরা মনে করেন, একটু পরিকল্পনা গ্রহণ করলেই বইমেলা আয়োজন করা সম্ভব।


তথ্য সুএঃ bbc.com


মুজিব ভাস্কর্য: 'বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্ক চলবে না' - দেশজুড়ে আমলাদের সমাবেশ

ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে সব পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা এসব সমাবেশ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

ঢাকায় বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে বিসিএসের সব ক্যাডারদের -সরকারি কর্মকর্তা ফোরাম- সমাবেশের আয়োজন করে যাতে সভাপতিত্ব করেছেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস।

মিস্টার কায়কাউস তার বক্তৃতায় বলেন, "আমরা উনত্রিশটি ক্যাডার সার্ভিসের সবাই আজ অঙ্গীকার করছি যে জাতির পিতার অসম্মান আমরা হতে দিবোনা। জয় বাংলা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান। আমরা সবাই কেন বক্তৃতার শেষে জয় বাংলা বলবোনা। আশা করি আজ থেকেই শুরু করবো এবং প্রয়োজনে সরকারের অনুমতি নিবো"।

এতে পুলিশের আইজিপি বেনজির আহমেদসহ বিসিএস এর সবগুলোর ক্যাডারের অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিবরাসহ প্রায় সব পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা যোগ দিয়েছেন।

এমন সময় তারা এই প্রতিবাদ করছেন, যখন একদিন আগেই খবর বেরিয়েছে, ভাস্কর্যের বিরোধীতাকারী বিভিন্ন ইসলামি সংগঠনের নেতাদের সাথে একটি সমঝোতা বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছে সরকার।

সমাবেশে দেয়া বক্তৃতায় পুলিশের আইজিপি বেনজির আহমেদ বলেন, "স্বাধীনতা, সংবিধান, রাষ্ট্র ও জাতির জনক- নো বডি ক্যান টাচ দেম"।

"আমরা তাদের মোকাবেলা করবো। বঙ্গবন্ধু দেশ, পতাকা, মানচিত্র দিয়েছেন। তার ওপর হামলা সংবিধানের ও রাষ্ট্রের ওপর হামলা। রাষ্ট্র অবশ্যই বিধিবিধান অনুযায়ী কঠোর হস্তে মোকাবেলা করবে"।

বিসিএস অডিট ও অ্যাকাউন্টস এসোসিয়েশনের মহাসচিব গোলাম সারোয়ার ভুঁইয়া বলেন, "জাতির পিতাকে যারা অসম্মান করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ করছি"।

বিসিএস কর অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফজলে হায়াত কায়সার বলেন, "বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতোনা, আর বাংলাদেশ না হলে এত ক্যাডার সার্ভিস হতোনা। ভাস্কর্য যারা ভেঙ্গেছে তারা দেশবিরোধী, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি"।

বিসিএস শুষ্ক ও আবগারি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব কাস্টমস কমিশনার বলেন, "এখনো এ দেশে কিছু মানুষ দেখা যাচ্ছে যারা জাতির পিতাকে অশ্রদ্ধা করছেন। ভাস্কর্য ভাঙ্গার মতো দুঃসাহস দেখাচ্ছে। তাদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করছি"।

তিনি বলেন, "অনেক মুসলিম দেশে ভাস্কর্য আছে। আমরা কি তাহলে বেশি মুসলমান হয়ে গেছি। আসলে তারা স্বাধীনতার প্রতি আঘাত করতে চায়। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বঙ্গবন্ধু- এসব নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই"।


তথ্য সূএঃ bbc.com