Wednesday, January 29, 2020

করোনা প্রতিরোধে বিশ্বনবির কথা মেনে চলছে চীন



চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে ম'রণব্যাধি করোনাভাইরাসের উদ্ভব হয়। বর্তমানে এ শহর ছাড়াও ১৩টির বেশি দেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। যার কোনো প্রতিষেধকও আবিষ্কৃত না হওয়ায় বিশ্বনবির নসিহত মেনে চলার ওপর জো'র দিয়েছে চীন কর্তৃপক্ষ।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শহরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নেপাল, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, জা'পান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্র এর মধ্যে অন্যতম।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ভাইরাসে চীনে মা'রা গেছে ১৩২ জন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ১৯৩ জন।

গবেষকরা ধারণা করছেন, যদি এ ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে তাহলে প্রায় ছয় কোটি মানুষ মৃ'ত্যুর মুখে পড়তে পারে। যার কোনো প্রতিষেধকও আবিষ্কৃত হয়নি এখনো।

মা'রাত্মক ম'রণব্যাধি এ করোনাভাইরাস। এ ভাইরাস থেকে বাঁচতে কুরআন সুন্নাহে কী' ধরনের নসিহত রয়েছে তা অনুসরণ করাই সবার জন্য জরুরি।

সম্প্রতি চীন করোনাভাইরাস থেকে বাঁ'চার সাধারণ যে উপায় অবলম্বন করছে, দেড় হাজার বছর আগে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে উপদেশ দিয়ে গেছেন। হাদিসের এ আমলই অনুসরণ করছে চীন।

এ রোগের সয়লাব ঠেকাতে চীন সরকার হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে রোগীসহ কোনো মানুষকে অন্য শহরে পাঠাবে না। আবার অন্য শহর থেকে কোনো মানুষকেও এ শহরে প্রবেশ করতে দেবে না। যাতে এ রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে না পারে। হাদিসের নির্দেশনাও এটি।

‘হ'জরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশে বা অঞ্চলে যদি কোনে প্রকার প্লেগ বা মহামা'রি জাতীয় সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সেক্ষেত্রে তোম'রা যারা (ওই অঞ্চলের) বাহিরে আছ তারা ওই শহরে প্রবেশ করো না। আর যে শহরে মহামা'রী ছড়িয়ে পড়েছে তোম'রা যদি সে শহরে বসবাস করো তবে তোম'রা সে অঞ্চল বা শহর থেকে বাহির হয়ো না।’ (বুখারি, মু'সলিম)

মহামা'রি মূলত আল্লাহর গজব। মহামা'রি প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
‘এটি আল্লাহর গজব বা শা'স্তি, যা (এ রকম শা'স্তি) বনি ইসরাঈলের এক গোষ্ঠীর ওপর এসেছিল, তার বাকি অংশই হচ্ছে মহামা'রি। অ'তএব, কোথাও মহামা'রি দেখা দিলে এবং সেখানে তোম'রা অবস্থানরত থাকলে সে জায়গা থেকে চলে এসো না। অন্যদিকে কোনো এলাকায় এটা দেখা দিলে এবং সেখানে তোম'রা অবস্থান না করলে সে জায়গায় যেয়ো না।’ (তিরমিজি)

চীনের এ হুবেই প্রদেশে বসবাস করে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ। চীন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের আলোকে এ শহর থেকে দেশি কিংবা বিদেশি কোনো মানুষকেই এখনই স্থান ত্যাগ তথা বিদেশিদের নিজ নিজ দেশে যেতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি সরাসরি হাদিসের আমল, যা দেড় হাজার বছর আগেই ঘোষণা করেছিলেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

করোনাভাইরাস এক অজানা আতঙ্ক। রাসুলে আরাবি মানবজাতিকে সতর্ক করেছেন অন্যায়, জুলুম ও অশ্লীলতার কারণে আল্লাহ তাআলা জালেম ও অন্যায়কারীদের ওপর অ'পরিচিত মহামা'রি চাপিয়ে দেন।

হাদিসে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামা'রি আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তা ছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।’ (ইবনে মাহাজ)

চীনের করোনাভাইরাস সে রকম ইঙ্গিতই বহন করছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘করোনাভাইরাসটি সার্স বা ইবোলঅর চেয়েও অনেক বেশি বিপজ্জনক। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বা'সতন্ত্রের মাধ্যমে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে অ'পরিচিত এসব ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কেয়ামতের বার্তা দিয়ে যায়। মানুষকে সতর্ক করে যায়। হাদিসের পরিভাষায়ও এটি পরিলক্ষিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

‘কিয়ামতের আগে ৬টি আলামত গণনা করে রাখো-

-আমা'র মৃ'ত্যু; অ'তঃপর

– বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়; তারপর

-তোমাদের মধ্যে বকরির পালের মহামা'রির মতো ঘটবে মহামা'রি;

-সম্পদের প্রাচুর্য, এমনকি এক ব্যক্তিকে একশ দিনার দেওয়ার পরও সে অসন্তুষ্ট থাকবে। তারপর

-এমন সব ফেতনা আসবে, যা আরবের প্রতিটি ঘরে প্রবেশ করবে। তারপর

-যু'দ্ধবিরতির চুক্তি হবে; যা তোমাদের ও বনি আসফার বা রোমকদের মধ্যে সম্পাদিত হবে। অ'তঃপর তারা বিশ্বা'সঘা'তকতা করবে এবং ৮০টি পতাকা উড়িয়ে তোমাদের বিপক্ষে আসবে; প্রতিটি পতাকার নিচে থাকবে ১২ হাজার সৈন্য।’ (বুখারি)

সুতরাং কেয়ামতের আগে এসব ফেতনায় হেফাজত থাকতে হবে। মহামা'রীর রূপধারণকারী এ ভাইরাস থেকে মুক্তি লাভে হাদিসের ওপর আমল করার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার বিকল্প নেই। বেশি বেশি ইসতেগফার করে জুলুম থেকে বিরত থাকাও জরুরি।

No comments:

Post a Comment